বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে পারে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের যাত্রায় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট উন্নত দেশ গড়ার অভিযাত্রা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে আমরা আমাদের জনগণ, নিজ নিজ অঞ্চল এবং এর বাইরেও শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রচার অব্যাহত রাখতে পারি।’
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮তম স্বাধীনতা দিবস (৪ জুলাই) উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও এতে বক্তব্য দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে জোরদার করার নতুন অঙ্গীকারের প্রশংসা করে উভয়পক্ষ। চলতি বছর নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার চিঠিতে, এটি ব্যক্ত করেছেন।
অনুষ্ঠানে পিটার হাস বলেন, গত পাঁচ দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সম্মানের গল্প। তিনি বলেন, ‘সংকট ও শান্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন ও সহায়তাকে আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করতে চাই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের বাণিজ্য বেড়েছে। ২০২২ সালে বাণিজ্য ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে এবং বিনিয়োগ চার বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং আমাদের এফডিআইয়ের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বড় আকার ধারণ করছে। সাত বছর ধরে ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া আমাদের সম্পদের ব্যাপক অপচয় করছে এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃস্থানীয় অংশীদার হয়েছে। আমরা এই দীর্ঘায়িত সংকটের অবসানে আমাদের আন্তর্জাতিক বন্ধুদের অব্যাহত ও নবায়নযোগ্য সমর্থন চাই।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সবচেয়ে কম দূষণকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। সামান্য কার্বন নিঃসরণ ও ব্যাপক উন্নয়ন প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ কম কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির পথ অনুসরণে বদ্ধপরিকর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সহায়তার প্রশংসা করি এবং জ্বালানি দক্ষতা, ক্লিনটেক-গ্রিন এনার্জি, স্মার্ট গ্রিড, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং জলবায়ু-স্মার্ট কৃষির মতো ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-৫০ এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও শক্তিশালী ও গভীর সহযোগিতার প্রত্যাশায় রয়েছি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যখন আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি, আসুন আমরা মানুষে-মানুষে দৃঢ় বন্ধনকেও আনন্দময় করি, যা আমাদের দেশগুলোকে আবদ্ধ করে। প্রাণবন্ত বাংলাদেশি-আমেরিকান সম্প্রদায় যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করেছে এবং আমাদের উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘আসুন আমরা স্বাধীনতার চেতনা এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বকে উদযাপন করি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।’