নরসিংদীতে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৪
নরসিংদীতে চালককে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
নিহত অটোরিকশা চালক মো. নুরুল ইসলাম মাধবদী থানার ভাটপাড়া গ্রামের মৃত কাসেম আলীর ছেলে। গ্রেপ্তাররা হলেন মাধবদী থানার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৭), সোহেল মিয়া (৩২), হৃদয় (২৭) ও নবী হোসেন (৩৫)।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ১৫ জুন নুরুল ইসলাম তার ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হন। ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে নুরুল ইসলাম তার ভাইকে মোবাইল ফোনে জানান তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। খবর পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ১৬ জুন সকালে নরসিংদী শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে মদনপুরগামী রাস্তার মাধবদী থানার দামের ভাওলা এলাকার একটি বড়ই গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বাঁধা অবস্থায় নুরুল ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলার পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগের তত্ত্বাবধানে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রিয়াজ উদ্দিন রনিসহ মাধবদী থানা পুলিশ জড়িত আসামিদের শনাক্তকরণ, ছিনতাইকৃত ব্যাটারিচালিত রিকশা উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। অভিযানের একপর্যায়ে ৯ জুলাই মাধবদী থানার একটি দল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি বাচ্চু মিয়াকে (২৭) মাধবদী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
তার দেওয়া তথ্যমতে, অভিযান পরিচালনা করে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একইদিনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হৃদয়, সোহেল ও নবী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য উল্লেখ করে এসপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৫ জুন রাত আটটার দিকে নরসিংদী শহরের সাহেপ্রতাব থেকে বাচ্চু মিয়া, হৃদয় ও সোহেল চালক নুরুল ইসলামের ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠে। রিকশায় ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসার পর আসামিরা নুরুল ইসলামকে বরই গাছের সঙ্গে পায়ে, পেটে ও গলায় গামছা দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে হত্যা করে এবং তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে তারা ব্যাটারিচালিত রিকশাটি নিয়ে নবী হোসেনের কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পরে সেই টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। আসামি নবী হোসেন ব্যাটারিচালিত রিকশাটি কেনার পর এর কিছু যন্ত্রাংশ খুলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। গ্রেপ্তারের পর আসামি নবী হোসেনের বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত ব্যাটারিচালিত রিকশার দুটি ব্যাটারি, একটি চাকা ও একটি হেডলাইট সংযুক্ত মিটারবক্স উদ্ধার করে মাধবদী থানা পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা ১৬৪ ধারায় নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তারা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।