মেট্রোরেলের ৫ স্টেশনে বাড়তি সতর্কতা, এপিবিএন মোতায়েন
কোটাবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে অধিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে মেট্রোরেলের পাঁচটি স্টেশনে আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে এমআরটি পুলিশের ডিআইজি মাহবুবুর কামাল এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এপিবিএনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আনসার, এমআরটি পুলিশের পাশাপাশি সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট স্টেশনে এপিবিএন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা এমআরটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন।
আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ স্টেশনের চার গেটেই তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চার গেটেই এমআরটি ও আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় এই স্টেশনে আসা যাত্রীদের অন্য স্টেশন ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ছাড়া এই স্টেশনে কোনো যাত্রীকে নামতেও দেখা যায়নি।
ডিআইজি মাহবুবুর কামাল বলেন, নিরাপত্তার জন্য মেট্রোরেলের তেজগাঁও (ফার্মগেট) স্টেশনের একটি গেট বন্ধ করা হয়েছে।
কোটা বাতিলের দাবিতে গত ১ জুলাই আন্দোলনে আছেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত ৭ জুলাই থেকে 'বাংলা ব্লকেড' নামে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। আজ রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব, নিউমার্কেট অবরোধ করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন কোটাবিরোধীরা। তবে, শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত দখলে রাখেন তারা। এমনকি, তাদের চাপে ভেঙে যায় পুলিশি ব্যারিকেড। যদিও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দাবি আদায়ের কথা জানান কোটাবিরোধীদের সমন্বয়করা। বাড়তি সতর্কতায় আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ শুরু থেকেই সাঁজোয়া যান ও জলকামান নিয়ে তৈরি ছিল পুলিশ। যদিও ব্যারিকেড ভেঙে কোটাবিরোধীরা এগোতে থাকলে পেছাতে শুরু করে এসব যান। পরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে পৌঁছে আন্দোলনরতরা সাঁজোয়াযানের ওপরে অবস্থান নেন। সেখান থেকে স্লোগান দিতে থাকেন। তারপরও পুলিশ নীরবতা পালন করে।
এদিকে, গতকাল বুধবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে, শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
আজ কোটাবিরোধীরা মাঠে নামলে জানা যায়, ২০১৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা বাতিলে পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায়ের মূল অংশ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন করতে পারবে। কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারবে। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মাঠের এ আন্দোলনকে ব্যবহার করে পানি ঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা লিমিট ক্রস করে যাচ্ছেন।
এরইমধ্যে আজ সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে শাহবাগের সিঁড়িতে চোখে পড়ে আর্মড পুলিশ সদস্যদের। তারা সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে ছিলেন।