বেনাপোলে প্রায় ১৬ টন সালফিউরিক অ্যাসিড জব্দ
বেনাপোল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা ১৫ টন ৭৫০ কেজি সালফিউরিক অ্যাসিড জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) চালানটি জব্দ করা হয়।
চালানটির বিল অব এন্ট্রি নম্বর সি-৫৫৯০৪। পণ্যটির ইনভয়েজ মূল্য ৯৬০৭.৫ মার্কিন ডলার। যা বাংলা টাকায় হবে ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কাস্টমস ডিউটিসহ পণ্যচালানটির মূল্য প্রায় ২১ লাখ টাকা বলে কাস্টমস জানায়।
পণ্য চালানটি ভারত থেকে আমদানি করেছে চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ভারতের কেরেলাস্থ ক্যাটালাইস কেমিক্যাল ইন্ডাট্রিজ। পণ্য চালানটি বন্দর থেকে খালাশকরণের দায়িত্বে ছিল মোশারফ টেডার্স নামে এক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেডগত ২ জুলাই ফরমিক অ্যাসিড নাম দিয়ে ১৫.৭৫ মেট্রিক টন সালফিউরিক অ্যাসিড আমদানি করে। পণ্য চালানটি বন্দরের ৩৮ শেডে রাখা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে পণ্য চালানটি কায়িক পরীক্ষাকালে নমুনা সংগ্রহ করে ক্যামিকেল পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। ল্যাব টেস্টে ফরমিক অ্যাসিডের পরিবর্তে সালফিউরিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। আর সালফিউরিক অ্যাসিড আমদানি করতে হলে এলসি খোলার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া সালফিউরিক অ্যাসিড আমদানি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ পণ্য চালানে মোটা অঙ্কের শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটত। ফরমিক অ্যাসিডের মোট শুল্কহার ৩৭% এবং সালফিউরিক অ্যাসিডের শুল্কহার ৭৮%। ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আমদানি ও শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা থাকায় পণ্য চালানটি সাময়িক আটক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মোশারফ টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমার আমদানিকারক ফরমিক অ্যাসিড আমদানি করেছেন। পণ্য চালানটি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করার পর কাস্টমস সেটা ল্যাবে পরীক্ষা করে ফরমিক অ্যাসিডের পরিবর্তে সালফিউরিক অ্যাসিড পেয়েছে। এখানে আমার কোনো ভুল নেই। ভুল করেছে আমদানিকারক। এর সব দায়ভার আমদানিকারকের। আমদানিকারক কী আমদানি করছে সেটা তিনিই ভালো জানেন। আমরা মাল ছাড়করণের জন্য কাজ করে থাকি। আমদানি করা পণ্যের ভেতর কী আছে, কী না আছে—সেটা পণ্যটি পরীক্ষার পর বুঝতে পারি। তবে আমার আমদানিকারক এই পণ্য চালানটি পুনরায় ল্যাব টেস্টের জন্য বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন।’
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, আমদানি করা কোনো পণ্যে অনিয়ম পেলে সেটা তো আটক করতেই হবে। চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেড নামে এক আমদানিকারক ফর্মিক অ্যাসিড ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি করে। পণ্যটি বেনাপোল বন্দরে আসার পর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। ল্যাব পরীক্ষা রিপোর্টে ফরমিক অ্যাসিডের স্থলে সালফিউরিক অ্যাসিড পাওয়া গেছে। সালফিউরিক অ্যাসিড আমদানি করতে হলে এলসি খোলার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন হয়। কোনো অনুমোদন তিনি নেননি আমদানি করার আগে। এটা একটা বড় ধরনের অপরাধ। বর্তমান বেনাপোল কাস্টমস হাউসে অনিয়মে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। কেউ অনিয়ম করলে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। এ পণ্য চালানের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’