বগুড়ায় পুলিশি বাধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের কর্মসূচি পণ্ড, আটক ১০
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। দেশজুড়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিহত হওয়ায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল।
আজ সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় সন্দেহভাজনদের ধরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া জলেশ্বরীতলা থেকে সাত শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হবে।
বিকেল ৩টার দিকে বগুড়া শহরের কেন্দ্রবিন্দু সাতমাথায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা ছিল। এ সময় সন্দেহভাজন হিসেবে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এরমধ্যে দুজন ছাত্রী ও একজন ছাত্র। এ ছাড়া মহিলা কলেজ রোড, বনানীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করে।
আটক রুকু আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী বলে জানান।
এ ছাড়া বিকেল ৩টায় শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জলেশ্বরীতলার কালী মন্দির এলাকার শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। এরপর ৪টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে কথা বলে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় জলেশ্বরীতলায় এক কোচিং সেন্টারে কোচিং শেষে শিক্ষার্থীরা বাড়ি যাওয়ার পথে সাত শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
এ ছাড়া দুপুর ২টায় আযিযুল হক কলেজ হতে একটি বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ছিল কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাস এলাকায় শিক্ষার্থীদের সমাবেত হতে দেননি। কলেজের আশপাশে ও স্টেশন রোডের বিভিন্ন মোড়ে বিপুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
এর আগে ১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বগুড়ার সাতমাথা এলাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনে ১৯ জুলাই বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মোড় এলাকায় সিয়াম শুভ (১৬) নামে এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী এসব ঘটনায় ইতোমধ্যে বগুড়ায় ১৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অন্তত ১৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের পাঠানো হয়েছে।