মা দেশ ছাড়তে চাননি, আমরা জোর করেছি : জয়
শেখ হাসিনা, যিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর সোমবার (৫ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। তবে তিনি কিছুতেই ছেড়ে যেতে চাননি, তবে পরিবারের পীড়াপীড়িতে একপর্যায়ে তা করেন। শেখ হাসিনার ছেলে ও তার সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে এ কথা জানান।
এনডিটিভিকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) থাকতে চেয়েছিলেন, দেশ ছাড়তে চাননি কিছুতেই। কিন্তু আমরা জোর করেছিলাম, কারণ পরিস্থিতি তার জন্য নিরাপদ নয়। আমরা প্রথমে তার নিরাপত্তার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলাম; তাই আমরা তাকে চলে যেতে রাজি করিয়েছিলাম।’
জয় বলেন, ‘আমি আজ সকালে তার সঙ্গে কথা বলেছি। দেখতে পাচ্ছেন, বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি। তিনি ভালো আছেন, কিন্তু তিনি খুবই হতাশ। এটা তার জন্য খুবই হতাশাজনক, কারণ বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার স্বপ্ন ছিল তার। তিনি গত ১৫ বছর ধরে দেশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন, দেশকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ থেকে সুরক্ষিত রেখেছেন এবং এসব সত্ত্বেও সংখ্যালঘু বক্তব্যবাজ বিরোধী দল, জঙ্গিরা এখন ক্ষমতা দখল করেছে।’
৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা সোমবার একটি সামরিক হেলিকপ্টারে তার বোনকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তিনি পরে লন্ডনে চলে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন। তবে জয় বলেন, শেখ হাসিনা এখন কোথায় যাবেন, এ নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়নি।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। কিন্তু, এই সময়ে আমাদের দলের নেতাদের টার্গেট করা হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কতটা সম্ভব হবে, তা আমি দেখতে পাচ্ছি না। এক হিসেবে এটা আর আমার পরিবারের দায়িত্ব নয়। আমরা কী করতে পারি তা দেখিয়েছি। আমরা দেখিয়েছি, আমরা বাংলাদেশের কতটা উন্নয়ন করতে পারি এবং বাংলাদেশের জনগণ যদি উঠে দাঁড়াতে না চায় এবং তারা এই সহিংস সংখ্যালঘুদের ক্ষমতা দখল করতে দিতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে জনগণ তাদের প্রাপ্য নেতৃত্ব পাবে।’
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জয় বলেন, ‘সেনাবাহিনী এত দ্রুত বিষয়গুলো স্বাভাবিক করতে সক্ষম হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কারণ এখন যা হচ্ছে তা হলো বিরোধী দল ও জঙ্গিরা, তারা শুধু ভাঙচুরই করছে না, তারা আমাদের নেতাদের, সাবেক মন্ত্রীদের এবং এমনকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কেও খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমি মনে করি না, সহিংসতা শেষ হয়েছে।’
জয় আরও বলেন, ‘হতাশা ও ক্ষোভের কারণ হলো আমার নানা দেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং তারা তাকে এবং পুরো পরিবারকে হত্যা করেছিল। এখন একই শক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা এই সুযোগটি ব্যবহার করে মূলত আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে অস্বীকার ও ধ্বংস করে দিচ্ছে। এটা খুবই হতাশাজনক যে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ চুপ করে আছে।’