সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে সাগর হোসেন (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ ৩৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন জামগড়া এলাকার সাগর হোসেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।

আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারপিট ও গুলিবর্ষণ করে গুরুতর জখমসহ হত্যাচেষ্টার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসসূচি চলাকালে গত ১৮ জুলাই দুপুরে সাভারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে প্রথম শহীদ হন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন। একই সময়ে আশুলিয়ায় নবীনগরে স্মৃতিসৌধের মোড়ে ঢাকা-আরিচা রাস্তার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ডান পা ও ডান হাতের বাহুতে গুলিবিদ্ধ হন সাগর হোসেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ভর্তি করা হয়।

সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ছাড়াও মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মাদবর, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শামীম আহম্মেদ সুমন ভুইয়া সুমন, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ দেওয়ান, ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এনামুল হক মুন্সী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ওমর ফারুক, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান, যুবলীগ নেতা কবির হোসেন সরকার, মইনুল হোসেন ভূঁইয়া, মোশারফ খান, রাজু দেওয়ান, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জু দেওয়ান শাজাহান মন্ডল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর রহমান সম্রাট।  

বাদী সাগর হোসেন জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে তিনি আশুলিয়া থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন। তবে প্রথমে তার মামলাটি পুলিশ গ্ৰহণ করেনি। পরে তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশুলিয়ার আমলি আদালতে মামলা করলে আদালতের নির্দেশে পুলিশ সিআর মামলাটি ‘এজাহার’ হিসেবে রেকর্ড করে।