সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে কাজ করা হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ তার রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বজায় রেখে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে যাবে। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন। সেন্টার ফর এনআরবি এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ও তাদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ অবদান রেখে চলেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশ আজ নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা আমাদের বৈদেশিক নীতির কিছু ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে কারও কোনও পরামর্শে বিচ্যুত হবো না। আমরা আমাদের নিজস্বতা ও মর্যাদা বজায় রেখে প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাবো। আমাদের ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে ও আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।
এনআরবি সেন্টারের চেয়ারপারসন এম এম এস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন— জাতিসংঘের স্কলার ইন্দোনেশিয়ার ড. শামসী আলী, জাতিসংঘের পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ইনা ইসলাম, লন্ডন ব্রান্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র পারভেজ আহমদ ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতা মো. সবুর খান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এনআরবি সেন্টার আমেরিকার সাপোর্ট গ্রুপের প্রতিনিধি ব্যবসায়ী সানওয়ার চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক শামসাদ হুসাম, সমাজসেবী বদরুন নাহার মিতা ও কবির চৌধুরী, মহিলা উদ্যোক্তা তহুরা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীন, কমিউনিটি নেতা রোকন হাকিম, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল আলম, ব্যবসায়ীনেতা লিটন আহমদ, ব্যাংকার ওয়াসেফ চৌধুরী, সমাজসেবী আব্দুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর আহমদ, তরুণ উদ্যোক্তা শেখ ফরহাদ প্রমুখ।
বক্তারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি দল নিরপেক্ষ মেধাবী ব্যক্তিদেরও কাজে লাগাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের জন্য ইতিবাচক কার্যক্রম, সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তাদের প্রশাসনের কাজে নিয়োজিত করার পথ তৈরির আহ্বান জানান। তারা বলেন, প্রবাসীরা দিতে চান, রাষ্ট্রের কাজ হবে এটি গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া।
প্রবাসীরা বলেন, দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। লুটকারীদের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ, রাজনীতির নামে দেশের ও প্রবাসীদের হয়রানি ও সম্পদ হরণ বন্ধ, আদর্শ রাজনীতিবিদদের অগ্রাধিকার দিয়ে দেশ পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম এস সেকিল চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে দেশের ব্র্যান্ডিং করছেন, রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখছেন। সুতরাং রাষ্ট্রকে প্রবাসীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট নবায়নসহ অত্যাবশ্যকীয় কনসুলার সেবাগুলো সহজ করতে হবে।
সেকিল চৌধুরী বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষীরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন। তাদের ত্যাগ বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে, এ কাজকে আরও এগিয়ে নিতে যেতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে দলবাজির বাইরে রাখতে হবে, কূটনীতিকদের দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে হবে, মিশনগুলোতে দলমত নির্বিশেষে সব প্রবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। মিশন কর্মকর্তাদের অযথা কাজে যোগদান থেকে বিরত রাখতে হবে।
বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও প্রকাশনার কাজ থেকে মিশন কর্মকর্তাদের বিরত থেকে প্রবাসী ও দেশের কাজে সময় ব্যয় করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদানের জন্য সেকিল চৌধুরী সরকারের কাছে আহ্বান জানান।