আইনজীবীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন ব্যারিস্টার সুমন
হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন। এদিন আদালতের আদেশ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকীসহ অন্যান্য আইনজীবীদের কাছে ক্ষমা চান ব্যারিস্টার সুমন।
ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম ব্যারিস্টার সুমনকে ১০ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। এরপরে দুপুর ১২টায় কড়া পুলিশ পাহারায় ব্যারিস্টার সুমনকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবী দিয়ে পরিপূর্ণ ছিল। আদালতের কাঠগড়ায় ব্যারিস্টার সুমনকে হাজির করা হয় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে। এ সময় তাকে আদালতের উৎসুক আইনজীবীরা ‘চোর চোর’ বলে কটাক্ষ করতে থাকেন। এ সময় তিনি মাথার হেলমেট খুলে মুখে আঙুল দিয়ে সবাইকে চুপ করতে বলেন।
এরপর আদালতে রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী ও আদালত পরিদর্শক আসাদুজ্জামান আসাদ। শুনানির পরে বিচারক তার পাঁচ দিন রিমান্ডের আদেশ দেন। আদেশের পরে বিচারক নেমে গেলে ব্যারিস্টার সুমন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকীকে ডাক দিয়ে ‘সরি’ বলেন। এ সময় অন্য আইনজীবীরা তাকে ‘দালাল’ বললে তিনি তখন সব আইনজীবীর কাছে ক্ষমা চান। এরপরে তাকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতের কাঠগড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ব্যারিস্টার সুমন স্বতন্ত্রপ্রার্থী থেকে নির্বাচন করলেও তিনি আওয়ামী লীগের উদীয়মান নেতা। আওয়ামী লীগসহ এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যারিস্টার সুমনের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীর ওপর দমন-নিপীড়ন করতে গোপনে ও প্রকাশ্যে নির্দেশনা ও উসকানি দেয়। যার ফলে বাংলাদেশে বহু মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উক্ত আসামিসহ অন্যান্য আসামিরা শান্তি সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণ এবং এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে বাদী ডান পায়ের হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এ ঘটনায় কারা কারা জড়িত তা বের করতে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে রাজধানীর পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল সোমবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-৬ থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার কিছু সময় আগে সোমবার দিনগত রাত সোয়া ১টার দিকে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন ব্যারিস্টার সুমন। এতে তিনি লেখেন, ‘আমি পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে গত ১১ সেপ্টেম্বর সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসহ ৯৭ জনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় মামলা হয়। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়।