বন্যার পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে : প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বন্যা মোকাবিলা ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান এবং স্থানীয় অনুদানের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। বন্যার ফলে অনেক জায়গায় ফসলহানি হয়েছে, ব্যাহত হয়েছে পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খল। বন্যা পরবর্তী সময়ে বাজারে শাক-সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে আপনাদের কষ্ট হয়েছে।’
আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়ানো জন্য আমরা সাড়ে নয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় শুল্ক ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে ডিমের উৎপাদনকারী যাতে সরাসরি বাজারে ডিম সরবরাহ করতে পারে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারে সেজন্য রাজধানীসহ বিভিন্ন স্পটে সরকারি কিছু পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি নিম্ন আয়ের ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে। বন্যার ফলে চালের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও দাম যাতে স্বাভাবিক থাকে এজন্য সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই। মূল্যস্ফীতির পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি রোধে উচ্চ সুদের হার নির্ধারণসহ একাধিক নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে; শস্য আমদানিতে এলসি সীমা অপসারণ এবং সরবরাহ চেইন সংক্ষিপ্ত করা। সামান্য হলেও জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘শিল্প কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে; যাতে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যাহত না হয় এবং রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। গণশুনানি ছাড়া নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম না বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা আশা করি বাজারে পণ্যমূল্য কমিয়ে আনতে এটা ভূমিকা রাখবে। নেপাল থেকে পানিবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’