বেনাপোলে টানা তৃতীয় দিনে পরিবহণ ধর্মঘট, ভোগান্তি চরমে
নতুন পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারের জটিলতায় বেনাপোল থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার সব পরিবহণ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিন দিনেও কোনো সমঝোতা না হওয়ায় চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের। বিকল্প ব্যবস্থায় অনেকে অতিরিক্ত খরচ করে বাড়ি ফিরছে।
গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের এ পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহণ ব্যবসায়ী সমিতি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বাসমালিকদের আলোচনা সভা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পরিবহণ ব্যবসায়ী সমিতি কেন এ ধর্মঘট ডেকেছে সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।
পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকে সব পরিবহণের বাসগুলো পৌরসভার নির্দেশনা মতো চলছিল। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলো যাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে খালি বাস পৌর বাস টার্মিনালে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের জোরপূর্বক টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং হয়রানির শিকার হয়। পরে সেসব যাত্রীকে লোকাল বাসে করে চেকপোস্টে পাঠায় টার্মিনালে থাকা পৌরসভার লোকজন। কোনো কিছু না জানিয়ে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে তিন দিন ধরে বেনাপোল থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রেখেছে তারা।
গতকাল রোববার সকালে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে উভয়পক্ষের মধ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় কোনো সমঝোতা হয়নি।
প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে যানজট নিরসনে নৌপরিবহণ উপদেষ্টার নির্দেশে এটা করা হয়েছে। উপদেষ্টার নির্দেশ ব্যতিত আমাদের পক্ষে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। পৌর টার্মিনাল থেকেই যাত্রী ওঠাতে হবে এবং নামাতে হবে।
অপরদিকে পরিবহণ মালিক সমিতি থেকে বলা হয়েছে আগের নিয়মে বাস চলাচল করতে হবে। তা না হলে তারা বাস চলাচল বন্ধ রাখবে।
পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা জানান, কয়েকদিন আগে শার্শার ইউএনও ও সুধী সমাজের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়। সেখানে যানজট নিরসনে পরিবহণগুলো নতুন পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী আমরা এই টার্মিনাল ব্যবহার করছি। তবে যাত্রী হয়রানি ও নিরাপত্তার জন্য শেষরাতের দূরপাল্লার পরিবহনগুলো যেন সীমান্ত ঘেঁষা পুরোনো টার্মিনালটি ব্যবহার করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জানতে চাইলে যশোরের শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজীব হাসান বলেন, কী কারণে তারা (পরিবহণ মালিক-শ্রমিক) ধর্মঘট ডেকেছে, আমরা সে বিষয়ে অবগত নই। তাদের কোনো কিছু বলার থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পরিবহণ সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর কোনো সমঝোতা হয়নি। যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ হয়রানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি।