তাবলিগের দুপক্ষের সংঘর্ষ : ইজতেমা বহালে আইনি নোটিশ
গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতসহ তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংগঠিত অনাকাঙ্খিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আল-কোরআন স্টাডি সেন্টার সুপ্রিম কোর্ট বার এর প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ-উজ-জামান এ নোটিশ পাঠান।
আইনি নোটিশে বিগত বছরের মতো ইজতেমা আগের মতোই চালু রাখা, বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্যে উদ্যোগ গ্রহণ করতে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সাথে সাথে তাবলীগ জামাতের লোকজন বসবাস বরার জন্যে কাকরাইল মসজিদের ভেতরে আবাসিক ব্যবস্থা বন্ধ করার আর্জিও জানানো হয়েছে।
অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জাতীয় দুর্যোগময় মুহূর্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও সমন্বয়মূলক সংগঠন আল-কুরআন স্টাডি সেন্টার সুপ্রিম কোর্ট বারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ-জামান ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বিবদমান সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী ও উভয় পক্ষ (জুবায়ের ও সাদপন্থি) পাঁচ জন করে ব্যক্তিকে রাখার জন্যে বলা হয়েছে।
বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের দুটি অংশ জুবায়ের ও সাদপন্থিদের চলমান দ্বন্দ্ব আবারও সংঘাতে রূপ নিয়েছে। টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে এক লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
এর আগে ২০১৮ সালে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও পাঁচ হাজার মানুষ আহত হয়েছিল। তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মার্কাজ ঢাকার কাকরাইল মসজিদের দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুপক্ষের সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি মাসেই দুবার পালাক্রমে দুপক্ষের মধ্যে দখল বেদখল চলছে।
এমনকি টঙ্গীতে তাদের ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরেই সড়ক অবরোধ, প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়াসহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে কাকরাইল মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ সমূহের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। এমনকি পক্ষ-বিপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন যাবৎ তাবলীগ জামাতের চলমান এ দ্বন্দ্ব সংঘাতের ঘটনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। ঘটনা যেভাবে চলমান তাতে মনে হয় ভবিষ্যতে আরো সংঘাত ও রক্তাক্ত ঘটনা ঘটতে পারে। মসজিদের পরিবেশ আরো কুলষিত হতে পারে। তাই সুপ্রিম কোর্টের আল-কুরআন স্টাডি সেন্টার তৌহিদী জনতাকে এমন ষড়যন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। এই মুহূর্তে তাদের সাহায্যে সরকারের এগিয়ে সমস্যা নিরসনে বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে আগামী ৫ দিনের মধ্যে উল্লেখিত শর্ত মতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আল-কুরআন স্টাডি সেন্টার হাইকোর্টের দারস্ত হয়ে প্রয়োজনীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আল-কোরআন স্টাডি সেন্টার সুপ্রিম কোর্ট বার এর প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ-উজ-জামান।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে কপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ডিজি ও ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি)।