চেতনানাশক খাইয়ে সাতজনকে খুন করে জাহাজের লস্কর আকাশ : র্যাব
বেতন-ভাতা ও ছুটি নিয়ে ক্ষোভের জেরে এমভি বাখেরা জাহাজের লস্কর আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে সাতজনকে হত্যা করেছেন। আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ তথ্য জানালেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আকাশ মন্ডলকে গ্রেপ্তারের সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ঘুমের ওষুধ, নিহতদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ, রক্তমাখা জিন্সের প্যান্ট ও গ্লাভস জব্দ করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার হওয়া আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানের বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকায়।
মেজর সাকিব হোসেন বলেন, আকাশ মন্ডল গত আট মাস ধরে এমবি বাখেরা জাহাজে চাকরিরত ছিলেন। জাহাজের মাস্টার কর্মচারীদের ওপর বিনা কারণে রাগারাগি এবং বিল-ভাউচার একাকি ভোগ করায় আকাশ মন্ডলের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই রেশ ধরে গত ২২ ডিসেম্বর (রোববার) রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অজ্ঞান করে আকাশ। এরপরই জাহাজের মাস্টার কিবরিয়াকে তার নিজের রুমে জাহাজের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে ধরা পড়ে যাবার ভয়ে একে একে অন্যদেরও একই চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এরপর একটি ট্রলারে করে আত্মগোপনে চলে যান আকাশ মন্ডল।
মেজর সাকিব হোসেন আরও বলেন, ২৩ ডিসেম্বর (সোমবার) চাঁদপুরের হাইমচর থেকে আল বাখেরা জাহাজে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে শৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তারাও মারা যান। তবে একমাত্র জীবিত জাহাজের অপর কর্মচারী জুয়েলের দেওয়া তথ্য অনুসারে নিবিড় তদন্ত করে র্যাব ২৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এরপরই তাকে নিয়ে আসা হয় র্যাব কুমিল্লা সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে। এখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান এই সাতজনকে খুনের ঘটনা র্যাবের কাছে স্বীকার করে। তবে ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো কারণ কিংবা কেউ জড়িত আছে কিনা, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে সাতজন খুনের এ ঘটনায় জাহাজ মালিকের পক্ষে চাঁদপুরে মামলা দায়ের করেন মাহবুব মোর্শেদ। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে হাইমচর থানায় এ মামলা করেন। মাহবুব মোরশেদের বাড়ি ঢাকার দোহার এলাকায়। মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।