নতুন বছরের শুরুতে লন্ডন যেতে পারেন খালেদা জিয়া
উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী বছরের শুরুর দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দিন-তারিখের বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে দল থেকে কিছুই জানানো হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডাম (বেগম খালেদা জিয়া) বিমান ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত থাকলে ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যেতে পারেন।’
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কাতার এয়ারওয়েজের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে। লন্ডন যাত্রায় ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, কয়েকজন চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা, তার ব্যক্তিগত সচিব এবং দুই গৃহকর্মীসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে থাকবেন। আরও জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয় তার সফরসঙ্গীদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসনকে লন্ডনে পাঠানোর জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। লন্ডনে তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিবারসহ ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সাল থেকে বসবাস করছেন।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত বছরের ২৬ অক্টোবর তিনজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বেগম খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে জমা পানি এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট বা টিআইপিএস পদ্ধতি নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ২০২১ সালের নভেম্বরে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছর করে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে, ২০২০ সালে ২৫ মার্চ গুলশানের বাড়ি ফিরোজায় থাকবেন এবং দেশ ত্যাগ করবেন না এমন শর্তে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ৭৭৬ দিন পর বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয় সরকার। গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের আদেশে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়।