২০২৭ সালের মধ্যে বিদ্যুৎখাতে বিপদের শঙ্কা বিএনপির
আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎখাতে বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন শঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়। সেখানে গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎখাতের পরিস্থিতি নিয়ে মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। টুকু বলেন, গত ১৫ বছর বিদ্যুতের যতগুলো পাওয়ার প্লান্ট বসানো হয়েছে তার সবগুলো মেশিন নষ্ট। শুধু টাকা কামাই করেই লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। সুতরাং এই বিদ্যুৎ উন্নয়ন সাসটেইনেবল নয়, যেকোন সময় মুখ থুবড়ে পড়বে। বিদ্যুৎ তো দেখা যায় না। বিদ্যুৎ তো হাওয়া। আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবসার খাত এবং লুটপাট করার মেশিন বানিয়েছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য দাবি করেন, আওয়ামী সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাত থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এক লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লাখ কোটি টাকা লুটপাট করে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠরা। যার পেছনে সামিটসহ পাঁচটি কোম্পানি জড়িত। সরকারকে দ্রুত এসব চুক্তি প্রকাশ করতে হবে। ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে বিগত সরকার। ডিস্ট্রিবিউশনের নামে নিজেরা কোম্পানি বানিয়ে লুট করেছে।
ইকবাল হাসান বলেন, বিএনপি সরকারে থাকতে ৬০ শতাংশ যেত সরকারি খাতে আর ৪০ শতাংশ যেত বেসরকারি খাতে। সরকারি মালিকানার পাওয়ার প্লান্টগুলো কিছু করা হয়নি। তারা ৮০ শতাংশ বেসরকারি মালিকানা দিয়ে টাকা কামাই করেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো বিদ্যুৎ খাতকে টেন্ডার করে দেওয়া। টেন্ডার হলে আমরা জানতে পারি। ক্যাপাসিটি চার্জ কত এটা নির্ধারণ করতে পারি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি, বিদ্যুত ও জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিগত সরকারের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ দুর্নীতির চিত্র ভেসে উঠেছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম নির্ধারণ এবং ঘুষের মাধ্যমে টেন্ডার দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। গেল ১৫ বছরে বিদ্যুৎখাতে টেন্ডারের বাইরে যেগুলো চুক্তি হয়েছে সেগুলো প্রকাশ করা জনগণের দাবি।
সাবেক এই বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিদ্যুত খাতে ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতি করতে ‘ম্যাজিক পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছিল আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে জনগণের চোখে ভেলকির মাধ্যমে পরিচালনা করে অর্থ লুটপাট এবং পাচারকে অন্যতম অগ্রাধিকার দেয়। শুরু থেকেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ধ্বংসের লক্ষ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে অবাস্তব ম্যাজিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার নীলনকশা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানান, ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব চুক্তি রিভিউ করে যেগুলো দুর্বল, সেগুলো নিয়ে কাজ করবে বিএনপি।