জলবায়ু সংকটে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৩০ লাখ শিশুর শিক্ষা ব্যাহত : ইউনিসেফ
বৈরী আবহাওয়াজনিত কারণে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৩০ লাখ শিশুসহ বিশ্বজুড়ে শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত ‘লার্নিং ইন্টারাপটেড : গ্লোবাল স্ন্যাপশট অব ক্লাইমেট-রিলেটেড স্কুল ডিসরাপশন ইন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং অন্যান্য চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনায় বিশ্বজুড়ে একাধিকবার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী তাপপ্রবাহ, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়, বন্যা ও খরার কারণে ৭৭টি দেশের কমপক্ষে ২৪ কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া ছিল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল।
২০২৪ সালের এপ্রিল ও মে মাসে বাংলাদেশে তাপপ্রবাহের কারণে শিশুরা পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে পড়ে, যার ফলে সারা দেশে দুই সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখতে হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে আরও কয়েক সপ্তাহ স্কুলে শিক্ষাদান ব্যাহত হয়। এরপর জুন মাসে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। দেশব্যাপী বন্যায় ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৭০ লাখ শিশুও রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, ‘জলবায়ু সংকটের ফলে চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনার ক্রমবর্ধমান হার ও তীব্রতা বাংলাদেশে শিশুদের শিক্ষার ওপর প্রভাব ফেলছে এবং শিশুদের শেখার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।’
রানা ফ্লাওয়ারস আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত তাপমাত্রা এবং অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকি কেবল স্কুলেরই ক্ষতি করে না, বরং শিক্ষার্থীদের একাগ্রতা, স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের এই প্রতিনিধি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে শিশুদের, বিশেষ করে কিশোরীদের স্কুল ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা এবং অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় পরিবার কর্তৃক তাদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
ইউনিসেফের চিলড্রেন ক্লাইমেট রিস্ক সূচক অনুসারে, বাংলাদেশের শিশুরা ইতোমধ্যেই জলবায়ু ও পরিবেশগত বিপত্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।