পোষা বিড়ালকে হত্যা, আদালতে মামলা

পোষা প্রাণি হিসেবে শহর-গ্রামে কমবেশি প্রায় অনেকেই বিড়াল পালন করে। কোনো প্রাণিকে লালন-পালন করলে তার প্রতি এক অদৃশ্য মায়ার জন্ম হয়। প্রিয় মানুষ চিরদিনের জন্য ছেড়ে চলে গেলে যতটা বেদনা দেয়, সখের পোষা বিড়ালও মারা গেলে ততটা দুঃখ হয়। আর যদি আদরের প্রাণিটাকে কেউ হত্যা করে, তখন যেকোনো উপায়েই সঠিক বিচারের দাবি করা মালিকের কর্তব্য। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। পোষা বিড়ালকে হত্যা করায় সরাসরি সিএমএম আদালতে করা হয়েছে মামলা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পোষা বিড়ালকে হত্যার অভিযোগে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদালতে পিপলস ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ারের পক্ষে নাফিসা নওরীন চৌধুরী এ মামলার আবেদন করেন। মামলাটি করা হয় মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের বাসিন্দা আকবর হোসেন শিবলুর বিরুদ্ধে। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের ৯ম তলার মনসুর নামে এক ব্যক্তির বিড়াল হারিয়ে যায়। পরে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামি আকবর হোসেন শিবলু বিড়ালটিকে ফুটবলের মতো লাথি মারছেন। লাথির আঘাতে বিড়ালটির নিথর দেহ পড়ে থাকে মাটিতে। এরপরও পা দিয়ে পাড়া দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রাণী কল্যাণ আইনে যা আছে?
বাংলাদেশে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইন, ১৯২০-এর ৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অকারণে শুধু সহিংসতা প্রদর্শনে কোনো প্রাণীকে হত্যা করে তাহলে তিনি অর্থদণ্ড, কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
আইনটিতে আরও বলা হয়েছে, প্রাণি হত্যার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা জরিমানা ও সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে, কোনো গোষ্ঠী ধর্ম বর্ণের রীতি পালনের জন্যে বা কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটলে তা অপরাধ বলে গণ্য করা হবে না।
এর আগে রাজধানীর রামপুরার বাগিচারটেক এলাকায় রাতের আঁধারে দুই মা কুকুরকে পিটিয়ে আধমরা করে এবং তাদের ১৪ দুধের বাচ্চাকে বস্তায় ভরে জীবন্ত মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনায় প্রাণীদের কল্যাণে সক্রিয় সংগঠন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন একটি মামলা করেন। সে মামলায় সিদ্দিক নামের এক যুবককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।