স্বাধীন প্রশিক্ষণ কমিশন গঠনে সুপারিশ জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/15/jnprshaasn.jpg)
জনপ্রশাসনে দক্ষতা ও সক্ষমতার উন্নয়নে স্বাধীন প্রশিক্ষণ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন।
এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। মোট ১৭ অধ্যায়ের প্রস্তাবের দশম অধ্যায়ে স্বাধীন প্রশিক্ষণ কমিশন গঠনের সুপারিশ করে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
সুপারিশে বলা হয়, সরকারের সব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও প্রশিক্ষণে উৎকর্ষ আনার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বাধীন প্রশিক্ষণ কমিশন গঠন করা। এ কমিশন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করবে, কাঠামোগত সংস্কার, কারিকুলাম প্রণয়ন এবং প্রশিক্ষণের পদ্ধতি সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেবে।
সুপারিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে সব বেসামরিক কর্মচারীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সেন্টার অব এক্সেলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা উচিত যাতে সব সার্ভিসের নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের অভিন্ন ও যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা যায় এবং বৈষম্য হ্রাস পায়। গোপালগঞ্জ, জামালপুর ও রংপুরে অবস্থিত অব্যবহৃত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমির তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একই সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আঞ্চলিক বিপিএটিসি হিসেবে ঘোষণা করে একই মডিউলে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশে বলা হয়, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির সঙ্গে শক্তিশালী সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক গড়ে গবেষণা ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সম্পদের সর্বোচ্চ কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগকে অধিকতর যুক্তিযুক্ত করার গুরুত্বারোপ করা হয়।
বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি একটি কৌশলগত ব্যবস্থাপনা দ্বারা স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যাদের ফ্যাকাল্টি সদস্যগণ বিদেশি ডিগ্রিধারী তাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে মাস্টার্স প্রোগ্রামের মতো উচ্চতর ডিগ্রি প্রদানের কার্যক্রম হাতে নেওয়া যেতে পারে। বর্তমানে বদলি, পদোন্নতি ও কর্মজীবন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের সাফল্যকে বিবেচনায় নেয়া হয় না। এর ফলে কর্মকর্তাগণ প্রশিক্ষণে আগ্রহী হন না এবং এমনকি তারা যখন যোগদান করেন তখনও এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেয় না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সুপারিশে আরও উল্লেখ করা হয়, কর্মজীবনের সঙ্গে প্রশিক্ষণকে সম্পৃক্ত করা হলে এরূপ মনোভাবের পরিবর্তন হবে। এভাবে প্রশিক্ষণে অর্জিত সাফল্যের তথ্য সরকারি কর্মচারীদের ব্যক্তিগত নথিতে সংরক্ষণ করা উচিত এবং সরকারি চাকরিতে পেশাদারিত্ব আনার জন্য এসব বিবেচনায় নেওয়া উচিত। বিভিন্ন সাধারণ ও কারিগরি পরিষেবায় নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।