ভাঙ্গুড়ায় সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

কুয়াশার চাদরে এসেছিল শীত। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কৃষকেরা বুকভরা আশা নিয়ে আবাদ করেছিলেন সরিষা। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রত্যেকটি মাঠে গেলেই চোখে পড়ে অবারিত সরিষার ক্ষেত। যেদিকে দু-চোখ যায় শুধু পাকা সরিষায় হলুদের সমারোহ। এবার সরিষা আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। ফলে সরিষা বিক্রি করে লাভের আশা করছেন তারা।
কথা হয় উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের বড় বিশাকোল গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিনের সঙ্গে। তিনি জানান, গত বছর সাড়ে চার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবার প্রায় ছয় বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে সরিষা ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, কিছু জমির সরিষা পেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। আবার কিছু জমির সরিষা তুলতে শুরু করেছেন চাষিরা। আবার কেউ কেউ সরিষা তুলে ক্ষেতের মাঝেই মাড়াই করছেন।
কৃষকেরা বলেন, অল্প সময় ও কম খরচে সরিষা আবাদ করা যায়। এজন্য কৃষকেরা সরিষা চাষে ঝুঁকছেন। আমন ধান ওঠার পর পর জমি প্রস্তুত করেন তারা। আবার কেউ কেউ ধানের জমিতে চাষ ছাড়াই সরিষা বীজ ছিটিয়ে দেন।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড শীত থাকলেও সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া এ উপজেলার মাটি সরিষার আবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরিষা চাষীদের যথাযথ পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন মাঠে থেকে। চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এতে ১০ হাজার ১০০ মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছেন তারা।

গত ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছিল ৮ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন সরিষা। এছাড়াও ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয় ৯ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন সরিষা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন জাহান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ভাঙ্গুড়ার ছয়টি ইউনিয়নে সর্বাধিক সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরিষা উঠানো প্রায় শেষের দিকে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অল্প দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সরিষা উঠানো শেষ হবে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সর্বক্ষণ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’