কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি

ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি। জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাণীশংকৈল উপজেলা। সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে মাত্র ১০ টাকা রিকশা ভাড়ায় পৌঁছা যায় রাজা টংকনাথের রাজবাড়িতে।
এই জনপদটি ১১০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে মালদুয়ার পরগনার অন্তর্গত ছিল। তাই আগে এই রাজবাড়ি মালদুয়ার রাজবাড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ সরকারের আস্থা লাভ করার জন্য রাজা বুদ্ধিনাথের ছেলে টংকনাথ এখানে ‘মালদুয়ার কোট’ স্থাপন করেছিলেন। পরে রাজা টংকনাথের স্ত্রী রাণী শংকরী দেবীর নামে এই এলাকার নাম হয় রাণীশংকৈল।
একসময়ের জাঁকজমকপূর্ণ কারুকাজে খচিত প্রাচীন এই রাজভবনটিতে এখনো অনেক কারুকাজ করা দেয়াল অবশিষ্ট আছে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে রাজবাড়িটি নির্মিত হয়। রাজা টংকনাথের বাবা বুদ্ধিনাথের আমলে রাজবাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বুদ্ধিনাথের মৃত্যুর পর রাজা টংকনাথ রাজবাড়ির অসমাপ্ত কাজ শেষ করেন।
তবে, দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কারকাজ না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী এই রাজবাড়ির দরজা, জানালাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। তদারকি না থাকায় বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে গজিয়েছে গাছপালা। খসে পড়েছে পলেস্তরা। জরাজীর্ন অবস্থায় রাজবাড়িটি। সন্ধ্যায় মাদক সেবনসহ নানা অপকর্মও হয় এখানে।
প্রায় প্রতিদিনই অনেক আগ্রহভরে দৃষ্টিনন্দন এই রাজবাড়িটি দেখতে আসছেন দূরদূরান্তের মানুষ। তবে দর্শনার্থীরা এর ভগ্নদশা দেখে মন খারাপ করে ফিরছেন। সংস্কার করা হলে এই বাড়িও হতে পারে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এমন মন্তব্য দর্শনার্থীদের। যদিও কিছুদিন আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে বাড়িটির কিছু সংস্কার করা হয়েছে তবে এটি চলমান রাখার দাবি এলাকাবাসীর । অনেকে মনে করেন এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলে বাড়িটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ বলেন, ‘এটি আমাদের ঐতিহ্যবাহী সম্পদ, এটি সংরক্ষণ করা এবং আগামী প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।’