হোমমেড কেকে সফল মারিয়া নারীদের অনুপ্রেরণা

বর্তমানে ঘরের কাজের বাইরেও নানান কাজ শিখে নারীদের উদ্যোক্তা হতে দেখা যায়। বিশেষ করে ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ছোঁয়ায় বদলে যেতে শুরু করেছে প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের জীবন-জীবিকা। এরমধ্যে ঘরে তৈরি কেক (হোমমেড কেক) বানিয়ে সফলতার গল্পটাও একই সুতোয় গাঁথা।
মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকার হোমমেড কেক বিক্রি করে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেয়ে মারিয়া নুর। ২০১৯ সালে কুমিল্লার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ঘরে কেক বানানো শিখে তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি নিজ এলাকায় কেক বিক্রি করে পেয়েছেন অভিনব সাফল্য। শুধু তাই নয়, প্রায় ৭০ জন তরুণীকে দিয়েছেন কেক তৈরির প্রশিক্ষণ। অনেককে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি।
হোমমেড কেক নিয়ে কাজ শুরুর দিকে নানা মন্তব্য শুনতে হতো মারিয়াকে। অনেকে বলতেন, পরিবারের অসচ্ছলতা আছে বলেই সে এ কাজে নেমেছে। তার স্বামী লন্ডনপ্রবাসী। অনেকে এটাও বলতেন, স্বামীর সঙ্গে সমস্যা চলছে। এসব কোনো কথাতেই কান না দিয়ে আপন গতিতে এগিয়েছেন মারিয়া।
বর্তমানে মারিয়া দৈনিক ১০ থেকে ১২টি কাস্টমাইজ কেকের ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বিক্রি করেছেন প্রায় লক্ষাধিক টাকার কেক। তার এই সফলতা দেখে কেক বানানো শিখতে আসছেন অসংখ্য মানুষ। তাদেরকে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে কেক তৈরির সব পদ্ধতি ও কলাকৌশল শেখাচ্ছেন মারিয়া। পরবর্তীতে তারাও নিজেদের পেজ খুলে পৃথকভাবে ব্যবসা করছেন, হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তা।
সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে মারিয়া নুর বলেন, ‘আমি যখন হোমমেড কেক বানাই, তখন মানুষ সচরাচর বেকারি থেকেই কেক কিনত। তবে এখন সময় বদলেছে। মানুষের এখন ঘরে তৈরি নিজেদের পছন্দের ডিজাইন অনুযায়ী কেক কেনায় আগ্রহ বেড়েছে। আমার বিক্রিও তাই বাড়ছে দিন দিন। এ ছাড়া তৈরি করেছি আরও ৭০ জন উদ্যোক্তা, যারা ছড়িয়ে গিয়েছে সমগ্র কসবায়। আমার একটাই ইচ্ছে ছিল, মানুষকে স্বাস্থ্যকর কেক বানিয়ে খাওয়ানো। বর্তমানে আমি কাস্টমাইজ কেক তৈরির পাশাপাশি একজন সফল গৃহিণী ও সফল উদ্যোক্তা। আমি আমার স্বামীর অনুপ্রেরণাতেই এতদূর আসতে পেরেছি। আমার মা-বাবাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নারীরা যদি পরিবারের একটু সহযোগিতা পায়, তাহলে অবশ্যই এগিয়ে যাবে। তাদের বেঁধে রাখা যাবে না।’