পুলিশের বাঁশি, মাইকের ঘোষণা উপেক্ষা করে ট্রেনের ছাদে বাড়ি ছুটছে মানুষ

ঈদ এলে বাড়ি ফিরতে ট্রেনের ছাদে চড়ে বসেন অনেকেই। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে আপনজনের কাছে ছুটে যান তাঁরা। ট্রেনের ছাদে চড়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করা যাবে না, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিবছরেরই চিত্র এটা। এবার ঈদযাত্রার শুরুর দিকে এ নিয়ে কঠোর ছিল কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার (২৯ মার্চ) ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে এসে সেই চেষ্টায় ছন্দপতন ঘটেছে।
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে গত সোমবার (২৪ মার্চ) থেকেই। ওই দিন ভোরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়েই আসন্ন ঈদের ট্রেনযাত্রা শুরু হয়। এবার ট্রেনের টিকিট পেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়নি যাত্রীদের। এখন পর্যন্ত দেখা দেয়নি শিডিউল বিপর্যয়।
সবমিলিয়ে যাত্রীরা নিরাপদ যাত্রায় ট্রেনকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তবে কেউ কেউ এই নিরাপদ যাত্রাকে অনিরাপদ করে ফেলছেন। টিকিট না পেয়ে বাড়ি ফিরতে চড়ে বসেন ট্রেনের ছাদে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গত সোমবার ঈদযাত্রা শুরুর পর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রীদের ছাদে উঠে ভ্রমণ করতে দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) কিছু ট্রেনে অল্পসংখ্যক যাত্রী ছাদে উঠে যাত্রার চেষ্টা করলেও রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নামিয়ে দেন।
তবে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে একটি আন্তঃনগর ট্রেন ছাদে শতাধিক যাত্রী নিয়ে কমলাপুর ছেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ছাদে উঠে পড়া যাত্রীদের নিচে নামাতে চেষ্টার কমতি ছিল না। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্তেও তাঁদের চেষ্টা করে যেতে দেখা যায়, কিন্তু ফল মেলেনি।
একই সময় কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় অভিমুখী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভেতরে যাত্রী ঠাসা। অনেকেই দাঁড়িয়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ ট্রেনের বগির দরজা কিংবা দুই বগির সংযোগস্থলেও অবস্থান নিয়েছেন।
এমন সময়ে ট্রেনের সামনের দিকে রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা অনবরত বাঁশি বাজাতে শুরু করেন। মাইকেও এই বিষয়ে সতর্ক বার্তা ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড় আর মানুষের কোলাহলে সেই শব্দ অস্ফুট রয়ে যায়।
ট্রেনের ছাদের দিকে তাকালে দেখা যায়, শতাধিক মানুষের কোমর থেকে হাঁটুর অংশ। ট্রেনের ছাদ ও প্ল্যাটফর্মের ছাদের এ দুইয়ের মাঝে থাকা ফাঁকা অংশটুকুতে একজন মানুষের ওই টুকুই দেখা যাচ্ছিল। দেখা যায়, ছাদে থাকা বেশির ভাগ মানুষ বাঁশির শব্দ আর মাইকে হুঁশিয়ারি শুনে তারা এক বগির ছাদ থেকে অন্য বগির ছাদের দিকে সরে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কেউ নামছিলেন না। অপেক্ষা করছিলেন ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার।