দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সিঙ্গাপুর মডেল অনুসরণ প্রয়োজন : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সিঙ্গাপুর মডেল অনুসরণ করা প্রয়োজন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ডেরেক লোহ সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, সিঙ্গাপুর একটি উন্নত ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ, যেখানে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তারা গত কয়েক দশকে তথ্যপ্রযুক্তিসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি সাধন করেছে। দুর্নীতিমুক্ত ও উন্নত সেবার কারণে দেশটি বিশ্ব পর্যটকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। সীমিত ভূমির কীভাবে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায় তার উদাহরণ সিঙ্গাপুর। দুর্নীতিমুক্ত সেবা প্রদানের রোল মডেল দেশটি। তাই বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সিঙ্গাপুর মডেল অনুসরণ করা প্রয়োজন।
বৈঠকে দুদেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নিরাপত্তা ইস্যু, জনশক্তি রপ্তানি, অগ্নিদুর্ঘটনার তদন্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ, সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়া অপরাধীদের ফেরত প্রদান, অভিবাসীসহ মানবপাচার রোধ, মানবাধিকার রক্ষা, বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালে এ্যাপিস (অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম) চালুর সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দেশটিতে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছে, যা সিঙ্গাপুরের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ সময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে জনশক্তি আমদানির আহ্বান জানান।
বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, সিঙ্গাপুরের প্রায় পাঁচ শতাংশ অধিবাসী বাংলাদেশের। এ সময় তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব গভীর করতে জনগণের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি অপরিহার্য যা পারস্পরিক ভরসা ও বিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করবে।
বাংলাদেশ থেকে অনেক অপরাধী পালিয়ে গিয়ে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এই অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক আইনি সহায়তা বিষয়ক চুক্তি বা লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট স্বাক্ষর হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে চিঠি দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস কর্মী তথা ফায়ার ফাইটাররা অগ্নি নির্বাপণ ও অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে অত্যন্ত দক্ষ। কিন্তু আমাদের বড় ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে সামর্থ্যের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের কারিগরি সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন।
এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত ।
বৈঠকে ঢাকাস্থ সিঙ্গাপুর দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিচেল লি, সিঙ্গাপুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকা ডিরেক্টরেটের কান্ট্রি অফিসার রাহুল আইজ্যাক ইত্তি আব্রাহামসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।