‘আজও কাজে আইছি, কাজ না করলে সংসার চলে না’

আজ মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। এ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যদিও ব্যক্তি পর্যায়ের অনেক শ্রমিক আজ দিনেও কাজ করে চলেছেন পেটের দায়ে। এমনই এক ব্যক্তির নাম আব্দুল জব্বার।
আব্দুল জব্বার লেগুনাচালক। দেড় যুগেরও বেশি সময় তিনি লেগুনা চালান। রাজধানীর ফার্মগেটের লেগুনা স্ট্যান্ডে তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয়। সে সময় তিনি বলছিলেন, ‘চালুর দিনে (সরকারি ছুটি বাদে) অনেক ভাড়া হয়। আজ ছুটি, রাস্তায় লোকজন কম। তারপরও কাজে আইছি, কাজ না করলে তো সংসার চলে না।’
জব্বার বলছিলেন, গেল ঈদের সময় কয়েকদিন লেগুনা চালাতে পেরেছি। সামনে আবার কোরবানির ঈদ। সে সময় তো চালাতে পারব না। এতোদিন বসে থাকলে সংসার চলবে কীভাবে? আজ যদিও লোকজন কম। অন্যদিন মালিককে ১ হাজার ২০০ টাকা দিই। আজ রাতে আয় বুঝে তাকে টাকা দেব। কারণ, আজ তো অতো আয় হবে না।’
পাশে রফিক নামে আরেক লেগুনাচালক ছিলেন। তিনি সে সময় মোহাম্মদপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘শ্রমিক অনেক হলেও সবার জন্য শ্রমিক দিবস না। যেমন আমার জন্য না। কাজ করা ছাড়া খাব কী? ঘরে মা অসুস্থ।’
রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনের নিচে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন রিকশাচালক ফাইজুল ইসলাম। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘কীসের শ্রমিক দিবস। কাজ করলে পেট চলে, না করলে চলে না। সংসারের অনেক খরচ। প্রতিদিন খরচ বাড়ছে। একদিন কাজ বন্ধ করলে অসুবিধা হয়।’
ফার্মগেটে বাসচালক মিজানুর রহমানের বলেন, ‘জানি শ্রমিক দিবস, কিন্তু ঘরে বসে করব কী? গাড়ি চালালে কিছু টাকা আয় হবে। আজ অন্যদিনের মতো বাসে যাত্রী নেই। আয়ও কম হবে। মালিকের গাড়িভাড়া দিয়ে বেশি থাকবে না। তারপরও আয় কম হলে মালিকের সঙ্গে আলাপ করে কিছু কম দেব।’
আজ শ্রমিক দিবসের দিনে প্রায় সব পেশার মানুষ ছুটিতে থাকলেও ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে চলেছেন। শ্রমিক দিবসের খবরও জানাচ্ছেন সাংবাদিকরা।
আনিসুজ্জামান ফয়সাল নামের এক সাংবাদিক বলেন, ‘আমরা মূলত শ্রমিক হলেও এমন পেশায় আছি যে শ্রমিক দিবসেও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। বাস্তবতা মেনে নিয়েই এই পেশায় এসেছি। তবে এইসব সরকারি ছুটির দিনগুলোতে অফিস করলে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা থাকলে আমরা ঈদের মতো আনন্দ নিয়ে কাজ করতে পারি।’