কুষ্টিয়ায় মেলা বসানো নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ১১

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মেলা বসানো নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-সরাফাত সুলতান, টিপু সুলতান, সুকুর শেখ, শরীফ, আসাকুর রহমান, হাবিবুর রহমান, কুদ্দুস প্রামাণিক, তুহিন হোসেন, জিহাদ হোসেন, জামাত আলী ও ইউনুস আলী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনুমতি ছাড়াই হোগলা চাপাইগাছি বাজারে গাজীকালু-চম্পাবতী মেলার আয়োজন করা হয়। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত কর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকেরা মেলা কমিটির পক্ষ নেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয় দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অন্তত ৩০টি দোকানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাজারের ব্যবসায়ী নাদের শেখ (৬৫) বলেন, শত শত বছর ধরে মেলা হয়ে আসছে। আজ দেখলাম দুপক্ষের মারামারি।
মেলায় হরেক মালের দোকান বসিয়েছিলেন পাবনার চাটমোহরের আরজ আলী। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আসরের পর থেকে জামায়াত-শিবিরের লোকজন বার বার উঠে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। পরে সন্ধ্যার একটু আগে কয়েক শ লোক রামদা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম। পরে এসে দেখি মালামাল কিছুই নেই। প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছে। থানায় মামলা করা হবে।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।’
বিএনপির সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান বলেন, ‘জামায়াতের শত শত লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করব।’
শতবছর ধরে চলা আসা এই মেলার এবার অনুমতি মেলেনি জানিয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, মেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।