স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে গেছেন ৮২ রোহিঙ্গা : ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বেশ কিছু রোহিঙ্গা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মংডুতে ফিরে গেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসির)।
সংস্থাটির প্রকাশিত একটি নথি অনুসারে, নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে এবং জমিতে চাষাবাদের আশায় ১২ থেকে ১৮ মে সময়ের মধ্যে প্রায় ৮২ জন রোহিঙ্গা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিয়ানমারের মংডুতে ফিরে গেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রকাশিত নথির উল্লেখ করে ইউএনএইচসিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ২০১৭ সালের পর এটিই প্রথম রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ঘটনা।
রাখাইন ও কক্সবাজারের আন্তঃসীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউএনএইচসিআরের সবশেষ তথ্যানুসারে, আশা করা হচ্ছে আরাকান আর্মি (এএ) কিছু নথিপত্র সরবরাহ করবে এবং আরও ৩০ থেকে ৪০ জন রোহিঙ্গা ফিরে যাবে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযানের ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই বিশাল আকারের বাস্তুচ্যুতির ফলে বাংলাদেশে আগে থেকে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে মোট রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।
জানা গেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন তরুণ ২০২৪ সালে জোরপূর্বক নিয়োগের কারণে পালিয়ে আসেন। এখন তারা বিশ্বাস করেন মংডুর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য আরাকান আর্মি ঘুষ গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে। তারা কক্সবাজার ক্যাম্পের পরিস্থিতি ও সংগঠিত গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ইউএনএইচসিআরের নথি উদ্ধৃত করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রত্যাবর্তনকারীদের সঙ্গে যদিও কোনো জোরজবরদস্তির খবর পাওয়া যায়নি, তবুও আরাকান আর্মি তাদের কী আশ্বাস দিয়েছে—তা এখনও স্পষ্ট নয়।’
এই সপ্তাহে আরাকান আর্মি পাঁচজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে—যারা মিয়ানমারে প্রবেশ করেছিলেন। আটকদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি ও একজন নিবন্ধিত শরণার্থী রয়েছেন।
চার বাংলাদেশিকে মুক্তি দেওয়া হলেও রোহিঙ্গা সংগঠিত গোষ্ঠী আরএসও এবং আরসার সঙ্গে যোগসূত্র থাকার সন্দেহে আরাকান আর্মি ওই শরণার্থীকে আটকে রেখেছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে সীমান্ত পারাপারের ক্ষেত্রে আরাকান আর্মির সন্দেহের তীব্রতার বহিঃপ্রকাশ।