ফেরির অভাবে চরফ্যাশন-দশমিনার মানুষের দুর্ভোগ

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট ও পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হাজিরহাট লঞ্চঘাটের মধ্যে ফেরির জন্য কয়েক লাখ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদী পাড়ি দিতে প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ট্রলার ও স্পিডবোটে চলাচল করছে যাত্রীরা। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিপণ্য ও অন্যান্য পণ্য ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় পৌঁছাতে ভোলা-বরিশাল রুট ব্যবহার করতে হয়, যা খরচ ও সময় দুইই বাড়িয়ে দেয়। অথচ ঘোষেরহাট-হাজিরহাট রুটে ফেরি চালু হলে পদ্মা সেতু হয়ে সহজেই ঢাকা যাওয়া সম্ভব হবে, যা যোগাযোগ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন আনবে।
এছাড়াও, ভোলা-দশমিনার মানুষদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় প্রায়ই পারাপার প্রয়োজন হয়। ফেরি চালু হলে মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে, পণ্য পরিবহণও সাশ্রয়ী হবে।
ঘোষেরহাট ঘাটের যাত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের জন্য ফেরি খুবই দরকার। ফেরি চালু হলে লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। হাজিরহাটের যাত্রীরাও বলছেন, উত্তাল তেঁতুলিয়া নদী পার হতে জীবনের ঝুঁকি থাকে, ফেরি চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
শিক্ষার্থী জান্নাত বেগম বলেন, নদী শান্ত থাকলে যাই, না হলে ফিরে আসতে হয়। ফেরি থাকলে এই সমস্যাগুলো থাকত না।
চরফ্যাশন ও দশমিনার ব্যবসায়ীরা জানান, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য দ্রুত ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য ফেরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন, পণ্য পঁচেও যাবে না।
সিনিয়র আইনজীবী ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের জীবনে পদ্মা সেতুর কোনও প্রভাব নেই। ফেরি চালু হলে পদ্মা সেতুর সুফল মিলবে। এজন্য আমি আবেদন করেছি, কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে আমলে নিয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি জানান, চরফ্যাশনের ঘোষের হাট এবং দশমিনার হাজিরহাটের মধ্যে ফেরি যোগাযোগ এখন সময়ের দাবি।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান জানান, ফেরির বিষয়ে সরকার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। ফেরি চালু হলে দুই অঞ্চলের যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসবে।
বঙ্গোপসাগর থেকে উৎপন্ন তেঁতুলিয়া নদী সব ঋতুতেই থাকে উত্তাল। তাই নিরাপদ ফেরি চলাচল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।