বিক্রেতা উটের দাম হাকাচ্ছেন ২৬ লাখ

পাকিস্তান থেকে পাঁচ বছর আগে তিনটি উট আনেন আমজাদ হোসেন। সেই উট থেকে একটি উট তিনি এবার রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটে তুলেছেন। দাম চাচ্ছেন ২৬ লাখ টাকা। তবে, সর্বশেষ তিনি ২৩ লাখ টাকায় উটটি বিক্রি করতে চান।
আমজাদ বসে ছিলেন উট থেকে বেশ দূরে থাকা একটি চৌকিতে। সেখান থেকে তিনি দেখছিলেন, তার উটের পাশে অনেকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কেউ কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার ভিডিও করছেন। মাঝেমধ্যে সাংবাদিকরাও যাচ্ছেন। উটের বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনের এ প্রতিবেদক সেখানে ছিলেন। সে সময় আকাশ চৌধুরী নামের এক ক্রেতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে গাবতলীর হাটে কথা বলছিলেন। উট বিক্রি সংক্রান্ত আলাপকালে আমজাদ বলছিলেন, ‘এই উটটি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনি আরও পাঁচ বছর আগে। প্রচুর খাওন দিতে হয় উটকে। এবার বাজারে নিয়ে এলাম। ২৬ লাখ টাকা দাম হলে বিক্রি করে দেব।’
সে সময় আকাশ চৌধুরী জানতে চান, কত হলে এ উট বিক্রি করা হবে? আমজাদ ২৫ লাখের কথা জানান। তখন আকাশ তাকে বলেন, ‘মনে করেন আপনি এক দরের বাজারে আছেন। এক দাম বলবেন, পছন্দ হলে নেওয়া হবে, না হলে কথা বাড়ানো হবে না। যে দামের পর আপনি আর কোনো দরদাম বলতে পারবেন না, আমিও বলব না।
এ কথার পর আমজাদ হোসেন জানতে চান, উট কে কিনবেন। আকাশ তাকে জানান, উটটি তার চাচা নেবেন। তখন আমজাদ আকাশের কাছে জানতে চান, ‘আপনারে কোনো টাকা দিতে হবে কি না।’ অর্থাৎ উটটি বিক্রি হলে দালালী স্বরূপ কোনো টাকা দাবি আছে কি না। সে সময় কোনো টাকা লাগবে না বলে জানান আকাশ।
এরপর ভেবেচিন্তে আমজাদ বলেন, ‘তাহলে ২৪ লাখ হলে বিক্রি হবে। আপনার চাচাকে আসতে বলেন। বাজারে আরও তিনটি উট আছে। যেগুলো এর অর্ধেক। এ উট সবচেয়ে বড়। ২৫ মণ মাংস হবে। এর কমে আর দিব না।’
এরপর আকাশের মুঠোফোন নম্বরটি নেন আমজাদ হোসেন। তখন আমজাদকে জানানো হয়, এ দাম নিয়ে আকাশের চাচার সঙ্গে বলা হবে। তিনি রাজি হলে উট দেখতে যাবেন, না হলে যাবেন না। এরপর আমজাদের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে আকাশ চৌধুরী চলে যান। এসব ঘটনার সময় এ প্রতিবেদক সেখানে ছিলেন। তখন আকাশের ফোন নম্বর নেন প্রতিবেদক।
সন্ধ্যার দিকে আকাশকে এ প্রতিবেদক কল দেন। তখন তিনি বলেন, ‘উট ব্যবসায়ী কল দিয়েছিলেন। তিনি খোঁজ নিলেন চাচা যাবেন কি না। কিন্তু আমি তখন আমজাদকে জানালাম, চাচা বলেছেন, ২০ লাখ টাকা বললেও চাচা দেখতে যাবেন। তখন আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এ টাকায় হবে না। তারপরও সামনাসামনি এসে কথা বলেন।’
তখন আকাশ চৌধুরী বলেন, কথা শুনে মনে হলো, ২০ লাখেও তিনি উট বিক্রি করে দেবেন। তবে, আমার চাচা উট কেনার চিন্তা থেকে সরে এসেছেন। কারণ, এবার বড় গরুর দাম তুলনামূলক কম। তিনি আগামীকাল গরু কিনতে যাবেন।’
হাটে আরও তিনটি উট উঠেছে। যশোর থেকে নাসির উদ্দিন নামের এক বিক্রেতা উট তিনটি নিয়ে এসেছেন। তিনটি উটের দুটির দাম হাকাচ্ছেন ১৪ লাখ টাকা করে। একটির দাম হাকাচ্ছেন ১৫ লাখ। নাসির উদ্দিনের দাবি, ‘এ তিনটি উটও পাকিস্তান থেকে আনা। এখন পর্যন্ত ক্রেতা কম। নেই বললেই চলে। কেনার জন্য তেমন কেউ আসছে না। যারা আসছেন, হয় ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে। নতুবা দেখতে আসছেন। ক্রেতা কম থাকায় দরদাম করার সুযোগও তেমন একটা হচ্ছে না। আশা করছি, আগামীকাল শুক্রবার অনেক ক্রেতা আসবেন। আমরাও বিক্রি করতে পারব।’