লালমাই পাহাড়জুড়ে কাঁঠালের মৌ মৌ ঘ্রাণ

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড়জুড়ে এখন কাঁঠালের মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরপুর। জ্যৈষ্ঠের শেষে ও আষাঢ়ের শুরুতে পাহাড়ের প্রতিটি গাছে দেখা মিলছে গাছভরা কাঁঠাল। পাহাড়ি এলাকা ছাড়িয়ে কাঁঠালের রসালো স্বাদ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই, রতনপুর, চন্ডিমুড়া ও বিজয়পুর বাজারে কাঁঠাল কেনাবেচা চলছে জমজমাট। স্থানীয়দের পাশাপাশি নোয়াখালী, ঢাকা থেকেও পাইকার ও পর্যটকেরা কাঁঠাল কিনে নিচ্ছেন। আকারভেদে প্রতিটি কাঁঠাল ১০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছর লালমাই পাহাড়ের পাশাপাশি আশপাশের বার্ড (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি), সেনানিবাস, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, ফায়ারিং স্কোয়াড ও বর্ডার গার্ড সেক্টর এলাকায়ও প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে।
নোয়াখালী থেকে কাঁঠাল কিনতে আসা পাইকার আবদুল ওহাব বলেন, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে দেশের অন্যান্য এলাকায় কাঁঠালের মৌসুম শেষ হয়ে যায়। কিন্তু লালমাই পাহাড়ের কাঁঠাল আষাঢ়ের শুরুতে পাকতে শুরু করে। এখানকার কাঁঠাল স্বাদ ও ঘ্রাণে অনন্য। আমি এখানে ১৫০ কাঁঠাল কিনেছি। গড়ে প্রতিটি কাঁঠালের দাম পড়েছে দেড়শ টাকা করে।
নোয়াখালী থেকে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা ফেরার পথে রতনপুর বাজারে থেমে পরিবারের জন্য দুটি কাঁঠাল কেনেন সৈয়দ রাকিব। তিনি জানান, প্রতিটি কাঁঠালের দাম পড়েছে ২০০ টাকা করে। আমার বাবা ও দাদা কাঁঠাল খুব পছন্দ করেন, তাই তাদের জন্যই কাঁঠাল দুটি কিনেছি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির খান বলেন, নানান প্রতিবন্ধকতা পার করে লালমাই পাহাড়ের ১৩৫ হেক্টরজুড়ে কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। একটি মৌসুমে স্থানীয় চাষি ও গৃহস্থরা প্রায় ৩ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেন। কাঁঠালের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়। লালমাই পাহাড়ের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এই মাটিতে কাঁঠাল উৎপাদনের সব উপাদান রয়েছে।
জোনায়েদ কবির খান আরও বলেন, যদি পাহাড় কাটা ও বন উজাড় বন্ধ করা যায়, তবে লালমাই পাহাড়ে কাঁঠালের বাম্পার ফলন সম্ভব। এটি কাঁঠাল উৎপাদনে দেশের অন্যতম অঞ্চল হয়ে উঠতে পারে।