রংপুরে বিএনপি কর্মীর মরদেহ নিয়ে স্বজনদের বিক্ষোভ

রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি কর্মী শফিকুল হত্যার বিচারের দাবিতে তার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। তিন মাস ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শফিকুল ইসলাম মারা যান।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার শহিদ মিনার চত্বরে নিহত শফিকুলের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন তার স্বজনরা। এ সময় আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানান তারা।
শফিকুল ইসলামের বাড়ি বদরগঞ্জের লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি গ্রামে। গত ৫ এপ্রিল মানিক মিয়ার বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
শফিকুলের স্বজন ও সহকর্মীদের দাবি, গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জে গেলে দোকানভাড়াকে কেন্দ্র করে একটি সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান তিনি। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান মানিক মিয়ার বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হন। এরপর রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শফিকুলের সন্তান ও স্বজনরা।
এ সময় তার ছেলে মুরাদ বলেন, ‘আজকে আমরা এতিম হয়েছি, কাল আপনারা হবেন। এরকম সন্ত্রাসীকে বদরগঞ্জের মাটি থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তাই সবাইকে আহ্বান জানাই, আপনারা সবাই একজোট হয়ে মানিক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ে মিম আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা যে এতদিন ধরে কষ্ট করেছেন, সেজন্য আমরা চাই এই খোলা আকাশের নিচে দোষীদের ফাঁসি দেওয়া হোক। তাহলে আমাদের মন শান্তি পাবে; আমার বাবাও শান্তি পাবে। মানিক চেয়ারম্যান, তার ছেলে তমাল ও তাদের সঙ্গীরা দিনদুপুরে কুপিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে।’
জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী থাকার কারণে নামধারী একটি কুচক্রী মহল দিবালোকে হত্যা করেছে তাকে। এ নিয়ে থানায় মামলা হলেও নির্বিকার ভূমিকায় পুলিশ। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত আছেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি, দ্রুতই বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’