একই প্রতিবেদন হুবহু একাধিকবার প্রকাশ, ১১ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল

একই প্রতিবেদন হুবহু একাধিকবার প্রকাশ করায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন ১১টি সংবাদপত্রের ঘোষণাপত্র (ডিক্লারেশন) বাতিল করেছে। গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এসব সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিলের আদেশ জারি করা হয়।
আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিষয়টি প্রকাশ পায়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) উম্মে হাবীবা মীরা এই ডিক্লারেশন বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিক্লারেশন বাতিল হওয়া সংবাদপত্রগুলো হলো আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার সম্পাদিত দৈনিক ঈষিকা, এন বি এম ইব্রাহীম খলিল রহিম সম্পাদিত দৈনিক বিশ্বের মুখপত্র, এফ এম এ ছালাম সম্পাদিত দৈনিক দেশের খবর, ফরিদা ইয়াসমীন রত্না সম্পাদিত হৃদয়ে বাংলাদেশ, মো. শামসুল আলম খান সম্পাদিত দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ, বিকাশ রায় সম্পাদিত সাপ্তাহিক পরিধি, আ ন ম ফারুক সম্পাদিত দৈনিক আলোকিত ময়মনসিংহ, আ ন ম ফারুক সম্পাদিত দৈনিক দিগন্ত বাংলা, ওমর ফারুক সম্পাদিত দৈনিক কিষানের দেশ, শেখ মেহেদী হাসান নাদিম প্রকাশিত দৈনিক জাহান (প্রথম অংশে রেবেকা ইয়াসমিন প্রকাশিত উল্লেখ ছিল), নাসির উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত দৈনিক অদম্য বাংলা।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন ১৯৭৩-এর ৪ ও ৭ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হওয়ায় সংবাদপত্রগুলোর ডিক্লারেশন একই আইনের ১০ ধারায় বাতিল করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, গত ৩০ মার্চ এবং ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ এপ্রিলের সংখ্যাগুলোতে পত্রিকাগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাতায় সব প্রতিবেদন হুবহু একই ধরনের ছাপা হয়েছিল। এ ছাড়া, ১০ এপ্রিল ও ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত ১১টি দৈনিকে অনুরূপভাবে ২য় ও ৩য় পাতায় হুবহু একই সংবাদ ও তথ্যচিত্র প্রকাশের অভিযোগ ছিল এবং উল্লিখিত সংখ্যাগুলো অনুমোদিত ছাপাখানা হতে মুদ্রিত হয়নি।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত ১৩টি পত্রিকার দুটি পাতায় সব প্রতিবেদন হুবহু প্রকাশ করায় পত্রিকাগুলোর সম্পাদক ও প্রকাশকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
শোকজ করা ১৩টি পত্রিকার মধ্যে মো. আফসর উদ্দিন সম্পাদিত দৈনিক সবুজ ও এম এ মতিন সম্পাদিত দৈনিক নিউ টাইমস ছাড়া বাকি ১১টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হলো।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এনটিভি অনলাইনকে জানান, ১০ এপ্রিল ও ১৩ এপ্রিল হুবহু একই সংবাদ ও তথ্যচিত্র প্রকাশ এবং অনুমোদিত ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত না হওয়ার বিষয়ে ১৬ এপ্রিল ১৩ পত্রিকার প্রকাশক/সম্পাদককে শোকজ করা হয়। পরে গত ২১ এপ্রিল ভুল স্বীকার করে ঘটনাটিকে ‘বাহ্যিক ছাপাখানার দায়িত্বহীনতা ও নিজস্ব মুদ্রণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সৃষ্ট একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি’ মর্মে ব্যাখ্যাসহ জবাব দাখিল করা হয়। তবে এই ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য বা যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হয়নি।
এ ছাড়া, গত ১৮ মে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্তেও প্রমাণিত হয় যে প্রকাশিত ১১ পত্রিকা অনুমোদিত ছাপাখানা হতে মুদ্রিত হচ্ছে না, যা আইন লঙ্ঘনের শামিল।
দৈনিক দেশের খবর পত্রিকার সম্পাদক এফ এম এ ছালাম বলেন, ডিক্লারেশন বাতিলের চিঠি এখনও হাতে পাইনি এবং এ বিষয়ে আমরা হাইকোর্টে যাব। দৈনিক জাহানের নির্বাহী সম্পাদক হাসিম উদ্দিন এবং দৈনিক আলোকিত ময়মনসিংহ ও দৈনিক দিগন্ত বাংলার সম্পাদক আ ন ম ফারুকও বাতিলের চিঠি হাতে না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।