বাজারের পাশে ময়লার ভাগাড়, বাড়ছে ডেঙ্গুর শঙ্কা

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ধারে, মুরাদনগর উপজেলার ব্যস্ততম কোম্পানীগঞ্জ বাজারের পাশে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন বাজারের পচা সবজি, পলিথিন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ও গৃহস্থালির নোংরা পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ পরিবেশ।
বর্জ্যের দুর্গন্ধে নাকাল পথচারী ও ক্রেতারা। বৃষ্টির পর চারপাশে জমে থাকা নোংরা পানিতে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে, এতে ডেঙ্গু ও অন্যান্য সংক্রামক রোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাজার কমিটির তদারকির অভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। সড়কের পাশে কোনো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় পুরো বাজার এলাকা এখন দুর্গন্ধ ও মশার আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ বাজার কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম খাঁন বলেন, বাজারের পাশে এত ময়লা থাকায় ওষুধের দোকানে বসে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে রোগী ও ক্রেতারা বিরক্ত হয়ে চলে যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো জরুরি।
স্থানীয় বাসিন্দা কুহিনূর বেগম বলেন, দুর্গন্ধে শ্বাস নেওয়া যায় না। সন্ধ্যার পর মশার কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গুজ্বর হচ্ছে, অথচ এখানে সপ্তাহের পর সপ্তাহ পানি জমে থাকে, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যাথা নেই।

বৃহত্তর কোম্পানীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাবেক আহ্বায়ক চন্দন বণিক বলেন, বাজারের পাশে বর্জ্যের স্তূপ জমে বাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ময়লা ফেলার সুনির্দিষ্ট স্থান না থাকায় ব্যবসায়ীরা যেমন সমস্যায়, তেমনি ক্রেতারাও ভোগান্তিতে পড়ছেন। বাজার কমিটি ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগেই এর সমাধান সম্ভব।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ময়লা-আবর্জনা ও নোংরা পানি মশার প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র। বাজার ও এর আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকলে রোগাক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে।

মুরাদনগর উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনছুর আলম জানান, এভাবে খোলা জায়গায় ময়লা ফেলা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। বাজার ও সড়কের পাশে নির্দিষ্ট বর্জ্য ফেলার স্থান এবং নিয়মিত পরিষ্কার অভিযান চালানো অত্যন্ত জরুরি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, উপজেলায় পৌরসভা না থাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বাজার এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদকে যৌথভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।