জুলাই সনদ : সংসদের উচ্চকক্ষের ভূমিকা কী হবে

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রায় আট মাস ধরে তিন ধাপে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তৈরি করা হয় ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’।
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। এদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এই সনদে সই করেন।
জুলাই সনদের ১৮ নম্বরে ধারায় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি উঠে এসেছে। উচ্চকক্ষের গঠনে বলা হয়:
(ক) নিম্নকক্ষের নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Representation-PR) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের ১০০ (একশত) জন সদস্য নির্বাচিত হবেন।
(খ) উচ্চকক্ষের মেয়াদ হবে শপথ গ্রহণের তারিখ হতে ৫ (পাঁচ) বছর। তবে কোনো কারণে নিম্নকক্ষ ভেঙ্গে গেলে উচ্চকক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হবে।
(গ) রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নকক্ষের সাধারণ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় একই সঙ্গে উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে। তালিকায় কমপক্ষে ১০ (দশ) শতাংশ নারী প্রার্থী থাকতে হবে।
এছাড়া ১৯ নম্বর ধারায় উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা তুলে ধরা হয়। তা হলো:
(ক) নিম্নকক্ষের প্রস্তাবিত আইন প্রণয়নের বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। উচ্চকক্ষের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না; তবে কোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য নিম্নকক্ষ বরাবর প্রস্তাব করতে পারবে। নিম্নকক্ষে পাসকৃত অর্থবিল এবং আস্থা ভোট ব্যতীত সকল বিল উচ্চকক্ষে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপিত হতে হবে। উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না। উচ্চকক্ষ কোনো বিল সর্বোচ্চ ২ (দুই) মাসের বেশি আটকে রাখলে তা উচ্চকক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত বলে বিবেচিত হবে।
(খ) যদি উচ্চকক্ষ কোনো বিল অনুমোদন করে সেক্ষেত্রে উভয় কক্ষ কর্তৃক পাসকৃত বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে।
(গ) যেক্ষেত্রে উচ্চকক্ষ সংশোধনের সুপারিশসহ বিল পুনর্বিবেচনার জন্য নিম্নকক্ষে পাঠাবে সেক্ষেত্রে নিম্নকক্ষ উচ্চকক্ষের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
(ঘ) উচ্চকক্ষ থেকে ফেরত পাঠানো বিল যদি নিম্নকক্ষের অধিবেশনে আবারও পাস হয়, তবে উচ্চকক্ষের অনুমোদন ছাড়াই বিলটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য প্রেরিত হবে।
(ঙ) সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত যেকোনো বিল উচ্চকক্ষের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস করতে হবে।