অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাঁচতে রাজসাক্ষী আইজিপি মামুন : আইনজীবী

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগ খণ্ডন করে শেখ হাসিনার খালাস চেয়েছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। তিনি বলেছেন, আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের অপরাধ গোপন করে অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাঁচার জন্য রাজসাক্ষী হয়েছেন এবং তার জবানবন্দি রেকর্ড করার পদ্ধতিটিও সঠিক ছিল না।
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তৃতীয় দিনের মতো আসামিপক্ষের আইনজীবী তার যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী আমির হোসেন এসব কথা বলেন।
আইনজীবী আমির হোসেন এ মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনের সাক্ষ্য সামনে আনেন এবং তাদের দেওয়া সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যান করেন।
সাক্ষী মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য নিয়ে এই আইনজীবী বলেন, মামলার সাক্ষী মাহমুদ সাহেবের বক্তব্য নিয়ে আমার যুক্তি হচ্ছে—উনি ভিন্ন মতাবলম্বী একজন ব্যক্তি। তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচরণ করা একজন ব্যক্তি। শেখ হাসিনার শাসন—সব কিছুই তার ভালো লাগে না। তিনি বলেন, ‘যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা’—এ রকম একজন লোক তিনি।
টানা তিনদিনের যুক্তি উপস্থাপন শেষে নিজের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে খালাসের আবেদন করেছেন আইনজীবী আমির হোসেন।
আগামীকাল (২৩ অক্টোবর)অ্যার্টনি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটর আবারও পাল্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন। এরপর রায় ঘোষণার দিন জানা যেতে পারে।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার।