ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গত কয়েক বছর ধরে করলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভালো বাজার মূল্য পাওয়ায় চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। ফলে এই উপজেলার কৃষকদের মধ্যে করলা চাষে আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে উৎপাদন বাড়ায় রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকায় নতুন পাইকারি বাজার সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

সালথা উপজেলার বল্লভদি এলাকার মডেল করলা চাষি মিলন ফকির ৮-১০ বছর আগে ৩৩ শতাংশ (এক বিঘা) জমিতে করলা চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই ভালো লাভ হওয়ায় তিনি প্রতিনিয়ত আবাদের পরিধি বাড়িয়েছেন। এ বছর তিনি প্রায় ছয় একর জমিতে করলা চাষ করেছেন। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ মণ করলা তুলে বিক্রি করছেন তিনি। প্রতি কেজি করলা পাইকারি দামে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা পাইকারদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে আশেপাশের কয়েকটি উপজেলায়।

আরও পড়ুন : দেশের বাজারে ফের কমল স্বর্ণের দাম

মিলন ফকির জানান, কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যখন তিনি কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার উপক্রম হয়েছিলেন, ঠিক তখনই করলা চাষ তাকে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছে। তিনি আরও জানান, শুধু তিনিই নন, এই উপজেলার অনেক কৃষকই তার করলা চাষে সফলতা দেখে এখন করলা চাষাবাদে ঝুঁকছেন। করলার বাজার মূল্য ভালো থাকায় তারা অন্য ফসলের তুলনায় যথেষ্ট লাভবানও হচ্ছেন।

মিলনের ভাই সাকিব আল হাসান জানান, তিনি নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি ভাইয়ের সঙ্গে করলা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। তাদের এই সফলতা দেখে অনেক চাষি এখন করলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এবং তাদের সহযোগিতা নিয়ে অনেকেই সফল হয়েছেন।

আরও পড়ুন : ‘লাশ গুলিবিদ্ধ, ঢাকায় দাফন করা যাবে না শর্ত দেয় পুলিশ’

জদনন্দী গ্রামের মোশারফ ফকির বলেন, করলা চাষে রোপণের শুরু থেকেই ওষুধ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে অনেক যত্নের ফলে এর সুফল পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা মনে করেন, যে হারে করলার আবাদ বাড়ছে তাতে আগামীতে বিপণন সংকট দেখা দিতে পারে। তবে করলা চাষের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়েছে। অনেক নারী জমি থেকে করলা তুলে অর্থ উপার্জন করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, চলতি বছরে উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে করলাসহ অন্যান্য সবজির আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে করলার আবাদ হয়েছে বড় অংশে। চাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে, তাদের প্রাকৃতিক উপায়ে এবং পরিকল্পনা মাফিক চাষাবাদে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। করলা বিপণনে রাজধানীসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে নতুন বাজার খুঁজতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।