জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণভোট হতে হবে : ডা. তাহের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এ পরিস্থিতির অবসান চাই। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক, তা আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু তার আগে অবশ্যই গণভোটের আয়োজন করতে হবে।
রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জামায়াতের নায়েবে আমির।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই জুলাই সনদের আদেশের ওপর গণভোট দিতে হবে। দেশবাসী সবাই গণভোটের ব্যাপারে একমত। তবে যারা সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায় যা সম্পূর্ণ অবাস্তব।
আরও পড়ুন : অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদ সম্মেলন দুপুরে
ডা. তাহের আরও বলেন, ড. ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তার সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এ সময় কোনো মহলের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের এই নেতা।
সবাই মিলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসে সকল সমস্যার একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, দেশের জনগণ সব সংকটের সমাধান চায়। জাতীয় ঐক্যই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ। কোনো কোনো মহল বলেন, গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।
ডা. তাহের আরও বলেন, বিগত ৫৪ বছরে বারবার ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই ধোঁকা, দলীয়করণ, আত্মীয়করণ ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে লুটপাট করেছে। জনগণ ও জুলাই যোদ্ধারা এ অবস্থার অবসান চায়।
আরও পড়ুন : চারপাশে গুপ্ত স্বৈরাচার ওত পেতে আছে : তারেক রহমান
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। তারা নিজেদের সংস্কারের পিতা দাবি করছিল। কিন্তু বাস্তবে সব সময়ই সংস্কারের বিরোধিতা করছে। দুনিয়ার কোনো দেশেই নোট অব ডিসেন্টের উপর গণভোট হয়নি।
ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো মিথ্যা বক্তব্য দেয় না। বিএনপির মহাসচিব জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এখন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে গিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে। অথচ অভিযোগ করছে, জামায়াত তাদের বিপদে ফেলেছে। বরঞ্চ তারা নিজেরাই মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে বিপদে পড়েছে। বিএনপির এক নেতা বলেছেন, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ ও গণভোট চায় না। আমাদের বক্তব্য হলো, জামায়াত কখন কোথায় বলেছে, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ ও গণভোট চায় না। বিএনপির এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ থাকলে তা জাতির সামনে পেশ করা উচিত। মূলত তারাই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসাইন ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)