গণভোটসহ ৫ দাবি মঙ্গলবারের মধ্যে মেনে নিতে সরকারকে হুঁশিয়ারি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবি আগামী ১১ নভেম্বরের আগে মেনে নিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় আট দলের নেতাদের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদানের পর মৎসভবনে সামনে সাংবাদিকদেরকে তিনি এই কথা জানান।
আরও পড়ুন : সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করব : ডা. তাহের
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, সরকারকে জানাতে চাই, আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় আমাদের আট দলের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর সমাবেশ। ওই সমাবেশের আগে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেন। না হয় ১১ তারিখ ঢাকার চিত্র বদলে যাবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক ছিলেন, তিনি নিতে চেয়েছিলেন আমাদের স্মারকলিপি। তিনি জানান উপদেষ্টাদের বৈঠক চলছে। আমরা জানাই সরকারে একজন প্রতিনিধি উপদেষ্টাদের একজন আসতে হবে।
আরও পড়ুন : নির্বাচনের আগে যে কোনো দিন গণভোট চায় জামায়াত
জামায়াত সেক্রেটারি আরও বলেন, উপদেষ্টাদের বৈঠক থেকে পরে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হয়ে আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এসময় তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের সালাম জানিয়েছেন। উপদেষ্টা আদিলুর রহমান সপ্তাহ খানেকের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সমাঝোতা করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আগামী ১১ তারিখের মহাসমাবেশে ঢাকার চিত্র বদলে যাবে।
আরও পড়ুন : চব্বিশের যুবশক্তিকে নিয়েই ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চাই : শফিকুর রহমান
এর আগে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল থেকেই মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও পল্টন মোড়ে জড়ো হতে থাকেন জামায়াতসহ অন্যান্য দলের কর্মী-সমর্থকরা। বেলা ১১টার পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিতে যমুনা অভিমুখে রওনা দেন জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে আসতেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ। পরে সেখানেই অবস্থান করছিলেন তারা। ফলে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট।
জামায়াত ছাড়া অন্য দলগুলো হলো— ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
আরও পড়ুন : জামায়াতনেতা তাহেরের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নবীন মুখ কামরুল হুদা
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে— জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এদিকে, আট ইসলামী দলের যুগপৎ এ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ-র্যা বসহ বিভিন্ন বাহিনী। রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইল, পল্টনসহ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।

নিজস্ব প্রতিবেদক