সীমানা জটিলতার প্রভাব পড়তে পারে নির্বাচনে : ইসি সচিব
বাগেরহাটের সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ নিয়ে হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, বাগেরহাটে কনস্টিটিয়েন্সি আগে চারটি ছিল। সেটা কমিয়ে তিনটি করে নির্বাচন কমিশন গেজেট করেছিল। ওই তিনটির সিদ্ধান্ত বাতিল করে চারটি পুনর্বহল করা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্তটা পাওয়ার পরে কমিশন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন যে আপিলে যাবেন নাকি এটা মেনে নেবেন। এখন পর্যন্ত আমরা সার্টিফাইড কপিটা পাইনি।
আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিকেল তিনটার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি সচিব জানান, সীমানা পুননির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায় ৩০টির বেশি আবেদন আদালতে গড়িয়েছে।
সীমানার জটিলতার কারণে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, পড়তে পারে। কেননা সীমানার ব্যাপারটা প্রাসঙ্গিকভাবে নির্ভর করছে আদালতের আদেশ কীভাবে কমিশন পর্যালোচনা করবেন বা তার পরবর্তী পদক্ষেপটা কীভাবে নেবেন সেটার ওপরে। সে পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আগামী ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সংলাপে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে কমিশন। তবে আওয়ামী লীগের শরিক রাজনৈতিক দলগুলো এই সংলাপে থাকবে কিনা তা জানাতে পারেনি ইসি।
এই নির্বাচনি সংলাপে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থাকবে কিনা জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, আগামী রোববার থেকে শুরু করি এবং সব নিবন্ধিত দল নিয়েই তো করতে হবে আলোচনাটা। ১৩ তারিখের আলোচনায় কাদের ডাকা হবে এখনও পর্যন্ত ঠিক করিনি। আপনাদের পর্যায়ক্রমে এটা জানাবো। আমরা তো গোপন করছি না। আমাকে একটু সময় দিন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আগেই আরপিও ও আচরণবিধি সংশোধনী করে কেন ইসি গেজেট প্রকাশ করল- জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সরাসরি কোনো জবাব দেননি।
জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা হবে কিনা জানতে চাইলে ‘বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে’ ইসি সচিব বলেন, কাদের ডাকবো এখনও ঠিক করিনি। আলোচনা করে এটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো। ধাপে ধাপে জানতে পারবেন।
দলগুলোর সঙ্গে ইসির কী বিষয়ে আলোচনা হবে- জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আমরা আরপিও এবং আচরণবিধিতে যে সব পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং একটা সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য তাদের সহযোগিতা- এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। তাদের বক্তব্য শুনব।
দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পর মতামতের ভিত্তিতে আরপিও ও আচরণবিধিতে পুনরায় সংশোধন করা হবে কিনা-জনাতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, পরশু দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি আছে, সেদিন নির্বাচনি সংলাপ আয়োজন করা যাবে কিনা-জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমাদের ব্যবস্থা রাখব। সংলাপ, আলোচনা বা মতবিনিময় যেটাই বলি না কেন, ১৩ তারিখে আমরা নিশ্চয়ই সেটা করব।
গণভোট প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, আমি অতীতেও বলেছি, আজকেও বলছি, গণভোট সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনে বা ইসি সচিবালয় পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা বা আলোচনা পাইনি।
ইসির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর অনাস্থা তৈরি হয়েছিল, সেটি ইসি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে কিনা-জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আমরা আশা করি সব দল পজিটিভ রেসপন্স করবেন। আমরা আগাগোড়া দুটা বিষয়ে একটু পিছিয়ে ছিলাম। একটা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মতবিনিময় বা সংলাপ আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে যে পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধন-এই দুটি বিষয়ে আমরা পিছিয়ে আছি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থদের জন্য আচরণবিধির গেজেট গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) মাঝরাতে প্রকাশ করে ইসি। আচরণবিধিতে কী কী পরিবর্তন এসেছে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, পোস্টারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একটা কনস্টিটিয়েন্সি একটা জনসভায় একজন প্রার্থী তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে প্রার্থী একাধিক জনসভা একটার পর একটা করলে, তিনটা করে মাইক ব্যবহার করতে পারবেন। সেখানে তো বাধা নেই।
ইসি সচিব আরও জানান, লিফলেট করা যাবে। ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড এটাও ব্যবহার করা যাবে। চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না।

নিজস্ব প্রতিবেদক