শেখ হাসিনাকে টাকা-সম্পত্তি প্রতারণা করে নিতে হবে কেন, প্রশ্ন আদালতের
আলোচিত পূর্বাচল প্লট জালিয়াতির তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাত বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া, দুই মামলায় শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রশ্ন রেখে বলেন, চারবার ক্ষমতায় থাকার পরও কেন শেখ হাসিনাকে টাকা-সম্পত্তি এভাবে প্রতারণা করে নিতে হবে? এ সময় আদালত আরও বলেন, শেষ হাসিনা কোটা ব্যবস্থার অপব্যবহার না করলে দেশের সাধারণ নাগরিকরা প্লট পেতেন। তিনি সাধারণ নাগরিকের অধিকার খর্ব করেছেন।
সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া সুধা সদনের তথ্য গোপন, রাজউকের নির্ধারিত ফরমে আবেদন না করা, হলফনামায় অসম্পূর্ণ তথ্য দাখিলের পরও অবিশ্বাস্য দ্রুততায় রাজধানীর নতুন শহর পূর্বাচলের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তাই নয়, দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং বোন শেখ রেহানা সিদ্দিক, বোনের দুই সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিকের নামেও বাগিয়ে নেন আরও ৫০ কাঠার প্লট। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে একাধিকবার ‘রিক্ত আমি, নিঃস্ব আমি, দেবার কিছু নাই….’ বললেও রাষ্ট্রের লক্ষ কোটি টাকা অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হাসিনা পরিবার পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লটের লোভও সামলাতে পারেননি। এই দুর্নীতিতে শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেন শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক।
চলতি বছরের ১০ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আদালতে প্লট দুর্নীতি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। তাতে এসব তথ্য উঠে আসে।
শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অপর তিনটি মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য হয়েছে আগামী সোমবার (১ ডিসেম্বর)। প্লট বরাদ্দ পাওয়া এই ছয়জন ছাড়াও মোট ৪৭ জনকে এই ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। রাজউকের কর্মকর্তা খুরশীদ আলম ছাড়া বাকি সব আসামি বর্তমানে পলাতক আছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক