সংসদ নির্বাচনে তিনভাগে মোতায়েন থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী : ইসি সচিব
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনভাগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। এই ধাপগুলো হলো- স্থায়ী (স্ট্যাটিক) মোতায়েন, মোবাইল টিম ও কেন্দ্রীয় রিজার্ভ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন আখতার আহমেদ।
ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত এজেন্সিগুলোর সবার সঙ্গে মিটিংয়ে বসেছিলাম। এর পরে হয়তো আমরা প্রয়োজনে বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট অবস্থায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সঙ্গে বসবো।
আখতার আহমেদ বলেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা নীতিমালা ও দিকনির্দেশনা দেবেন— কিভাবে কি কাজ করবেন, কি করবেন না— সেগুলো অন্যান্য বারের মতোই প্রদান করবেন। আমরা সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বয় করব। এই সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় নির্বাচন কমিশন থেকেই দেখা হবে।
ইসি সচিব আরও বলেন, এখানে (ইসি ভবনে) আমরা একটি পর্যবেক্ষণ সেল করব। আর সে পর্যবেক্ষণ সেলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর একটি সমন্বয় থাকবে। এখন সেলের আকার কত হবে, কতজন প্রতিনিধি থাকবে—এটা সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে যে সংখ্যা দেবেন, সেইভাবেই আমরা সমন্বয় করে নেব।
ইসি সচিব বলেন, সাইবার নিরাপত্তা সেল গঠন করা হবে, যেখানে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম পর্যবেক্ষণ করা হবে যাতে অপতথ্য সংস্কৃতি থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারি। এখানে আমরা ইউএনডিপির যে প্ল্যাটফর্ম আছে, সেটা ব্যবহার করব। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব সক্রিয় সক্ষমতা, তথ্য মন্ত্রণালয়, সিআইডি এবং অন্যান্য যে এজেন্সি তথ্য যাচাইয়ের ব্যাপারে সক্ষমতা রাখে সেগুলোও সমন্বয় করব।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের কৌশলের কথা উল্লেখ করে আখতার আহমেদ বলেন, যোগাযোগ কৌশল হবে দুভাবে- উপর থেকে নিচে এবং নিচ থেকে উপরে। অর্থাৎ শুধু তথ্য উপর থেকে নিচে যাবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ হবে তা নয়, বরং নিচ থেকেও তথ্য উপর দিকে আসবে। নিচ বলতে আমি একেবারে গ্রাউন্ড লেভেল পর্যন্ত বোঝাচ্ছি—সেখান থেকে তথ্য উপরে এসে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা হবে।
তিনভাগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কথা জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, স্থায়ী (স্ট্যাটিক) মোতায়েন- যেখানে কেন্দ্রভিত্তিক কিছু নিরাপত্তাকর্মী থাকবেন। এর সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট থাকবে স্থায়ী বা অস্থায়ী উভয়ই। মোবাইল চেকপোস্ট- মানে এক জায়গায় করে দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে আবার করা এটিও প্রকৃতিতে স্থায়ী ধরনের। মোবাইল ইউনিট- তারা ঘুরে ঘুরে নজরদারি করবে। একটি মোবাইল ইউনিট কতগুলো কেন্দ্র দেখবে তা এখনো সংশ্লিষ্ট বাহিনী ঠিক করেনি। তাদের বিবেচনায় ভৌগোলিক অবস্থান, সড়ক সংযোগ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করবে। কেন্দ্রীয় রিজার্ভ-এটি প্রধান রিজার্ভ শক্তি হিসেবে প্রস্তুত থাকবে। মোতায়েন পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনটি অংশ—স্থায়ী, মোবাইল এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ—আগেই নির্ধারিত থাকবে। এখন পর্যন্ত আমাদের নির্দেশনামালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের মতো করে তা সাজাবে। এর সাথে প্রচলিত বিশেষ আঘাতকারী বাহিনীও (স্ট্রাইকিং ফোর্স) থাকবে, যাদের দ্রুত চলাচলের ক্ষমতা ও প্রতিরোধমূলক উপস্থিতি নিশ্চিত করার সক্ষমতা রয়েছে।
কোনো নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ নাই উল্লেখ করে সচিব বলেন, কোনো এজেন্সি নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করেনি। তারা বলেছেন, যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা এখনো নেই। সম্পর্কিত এজেন্সি পরে জানাবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক