পাবনায় জামায়াত-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ২০
পাবনার ঈশ্বরদীতে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থকদের মধ্যে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে অন্তত চারটি মোটরসাইকেলে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আলহাজ মোড় চর গড়গড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের তাৎক্ষণিক নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জামায়াত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনি প্রচার কাজে সেখানে আমরা গিয়েছিলাম। প্রচার কাজ শেষে ফেরার পথে বিএনপির হাবিব সমর্থকেরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার নেতাকর্মী ও গাড়ি বহরে হামলা করেছে। হাবিবের নির্দেশে তারা এই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই হামলায় আমাদের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। বেশ কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। হামলায় ধারালো অস্ত্র ব্যবহার ও বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছে। এমন ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
ঘটনার পরে পাবনা শহরে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল করে দলের নেতাকর্মীরা। তারা এ ঘটনায় বিএনপির নেতা হাবিবসহ তার সমর্থকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এদিকে ঘটনার পরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত এলাকায় ধর্মের নামে মিথ্যা কথা বলে ভোট চাইছে। আমাদের নেতাকর্মীদের নানাভাবে ভয়ভীতি হয়রানি করছে। আজকে তারা নির্বাচনি প্রচার মিছিল বের করে। এসময় তারা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের দেখে হামলা করে। তাদের আনা গাড়ি বহর থেকে অস্ত্র বের করে গুলি করেছে। তারা সুসজ্জিত অবস্থায় এলাকায় বিএনপির নেতাদের ওপরে হামলার উদ্দেশে এসেছিল। তালেব মন্ডল নিজে গুলি করেছে।
ঘটনার বিষয়ে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ঘটনায় জামায়াত প্রার্থী আবু তালেব মন্ডল নির্বাচনি প্রচার কাজে এসে আমাদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা করেছে। আমাদের কৃষকদলের নেতাসহ অর্ধশত নেতাকর্মী সাধারণ গ্রামবাসী আহত হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে। জামায়াত সবসময় মিথ্যাচার করে বিএনপিকে ছোট করতে চায়। গ্রামবাসী যখন একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করেছে তখন তারা পালিয়েছে। আমরা এই ঘটনায় পুলিশকে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানাচ্ছি।
ঈশ্বরদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) প্রণব সাহা জানান, আসন্ন নির্বাচনে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর সাহাপুর চর গড়গড়িতে স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা জামায়াতের আমির তালেব মন্ডলসহ তার নেতৃবৃন্দ ওই এলাকায় দলীয় প্রচারণা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷ ঘটনায় বেশ কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কতজন প্রকৃতভাবে আহত হয়েছে সেটি বলতে পারছি না। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।

এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা