শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সৎ মা আটক
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নাঈম নামে সাড়ে চার বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার সৎ মা জাহানারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার (৩০ নভেম্বর) উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের গিলাকুড়ি গ্রাম থেকে জাহানারা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
জানা গেছে, গতকাল শিশুটিকে পিটেয়ে হত্যা করা হয়। পরে বিকেলে পুলিশ সৎ মা’কে আটক করে। তবে শিশুটির বাবা জলিল শেখ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাটের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জলিল শেখের প্রথম স্ত্রী লিপি বেগম মারা যাওয়ার পর তার দুই সন্তান জান্নাতি ও নাঈমকে রেখে যান। পরে জলিল শেখ তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা বেগমকে বিয়ে করেন। জাহানারা বেগমের একটি ছেলে হওয়ার পর থেকেই নাঈম ও জান্নাতির ওপর দুঃখ নেমে আসে।
প্রতিবেশী ও নাঈমের মামার অভিযোগ, শিশুটিকে প্রায়ই মারধর করা হতো। তারই জের ধরে রোববার বেলা ১১টার দিকে বাবার অনুপস্থিতিতে নাঈমকে বাসার ভেতরে মারধর করেন সৎ মা জাহানারা বেগম।
প্রতিবেশী নাজমিন আক্তার নাজু বলেন, জাহানারা বেগম তাদের ডেকে আনলে তারা বাসায় গিয়ে নাঈমকে মেঝেতে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের কালচে দাগ ও মাথায় রক্তাক্ত গভীর ক্ষত ছিল।
নিহত নাঈমের মামা ফিরোজ হোসেন অভিযোগ করেন, ‘নাঈমকে তার বাবা ও সৎ মা প্রায়ই মারধর করত। তাকে ইট ও পাথর দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বাথরুমে রাখা হয়। তার সৎ মা জাহানারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন জাহানারা বেগমকে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করার পর সৎ মা জাহানারা বেগমকে আটক করে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আরিফ হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশু নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ইতোমধ্যে তার সৎ মা’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তার বাবা পলাতক আছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শাহজাহান সিরাজ মিঠু, জয়পুরহাট