ঢাবি চারুকলা ১৬তম ব্যাচের ৩২ শিল্পীর ‘ষোল রং’ প্রদর্শনী
রাজধানীর ধানমণ্ডির গ্যালারি চিত্রকে আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে উদ্বোধন হলো ‘ষোল রং- সিক্সটিন শেডস অব দ্য সিক্সটিনথ ব্যাচ’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ১৬তম ব্যাচের ৩২ জন শিল্পীর চিত্রকর্ম নিয়ে আয়োজিত এই দলীয় প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষক এবং আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক মঈনুদ্দীন খালেদ এবং গ্যালারি চিত্রকের নির্বাহী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান।
কিউরেটর রাজিব আহমেদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ষোল রং হলো শিল্পযাত্রার পুনর্মিলন ও পরিচয়ের পুনরাবিষ্কার। এই প্রদর্শনী নিজেদের কাছে ফিরে যাওয়ার এক যাত্রা। দীর্ঘ বিরতির পরও শিল্পীরা সৃজনশীলতায় যুক্ত ছিলেন, আর এই আয়োজন তাদের নতুন আলিঙ্গনের প্রতীক। প্রদর্শনীর নাম ব্যাচটির বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আবেগী ভুবনকে তুলে ধরে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ষোল রঙের ষোল কলা পূর্ণ হোক। ৩২ জন বন্ধু ৬০টি চিত্র নিয়ে যে প্রদর্শনী করেছে, তা প্রশংসনীয়। প্রদর্শনীর বিকল্প নেই। দর্শক কম হলেও একজন সত্যিকারের দর্শক তোমার ছবির মূল্য বুঝবে- তাই প্রদর্শনী করতেই হবে।
অধ্যাপক মঈনুদ্দীন খালেদ বলেন, এই ৩২ জন শিল্পীর মধ্যে ২১ জন নারী- এটি বড়ই ইতিবাচক। পরিবার সামলে শিল্পচর্চা করা কঠিন, কিন্তু তাদের নিষ্ঠা অনুপ্রেরণাদায়ক। শিল্পীরা জটিলতায় না গিয়ে সহজ বিষয় তুলে ধরেছেন, যা দর্শকের সঙ্গে সহজেই সংযোগ স্থাপন করবে।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, শিক্ষাজীবনের পর ৩২ জন শিল্পীর পুনর্মিলন এবং প্রদর্শনী আয়োজন প্রশংসনীয়। অনেকেই দীর্ঘদিন পর ছবি এঁকেছেন। শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখতে হবে, নাহলে পিছিয়ে যেতে হয়। ভবিষ্যতে আমি ৩২ জন শিল্পীর একক প্রদর্শনী দেখতে চাই।
প্রদর্শনীটিতে ১৬তম ব্যাচের প্রয়াত বন্ধু জুলকারনাইন আশজাদির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। রেখাচিত্র, পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং, ভাস্কর্য, জলরং, সিরামিক ও কারুশিল্পে শিল্পীরা আবেগ, স্মৃতি, প্রকৃতি, নগরজীবন ও পরিচয়ের বহুমাত্রিক বিষয়কে নতুন ভিজ্যুয়াল ভাষায় তুলে ধরেছেন।
শিল্পী রাজিব আহমেদ, নাজমুস সাকিব, মো. রিয়াদ হোসেন, মেহনাজ তাবাসসুম অনন্যা, আরাশাতুল ফাতিমা সুলতানা, সাবরিনা ফারাহ, কামরুন নাহার ময়না, উপমা দাস তৃণা, নাহিদা নিসা, চঞ্চল কুমার বিশ্বাস, মেহেদী হাসান মিঠুন, সোমা সুরভী জান্নাত, নাফিয়া তাবাসসুম, তানজিমা তাবাচ্ছুম এশা, শেখ ফারহানা পারভীন টুম্পা, নাজমুন নাহার আকন্দ, কাজী আবু আবিদ, কোহিনূর আক্তার মীরা, হ্যাপি মণ্ডল, স্মিতা দাস তুলি, স্মৃতি খন্দকার, লিটন পাল রনি, হাবিব রহমান, মো. শফিকুল ইসলাম রাজরাজ, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম (আরিফ), আঞ্জুমানারা সোনিয়া, আকলিমা ইকবাল, ঈশিতা ইসলাম, শর্মী দাশগুপ্তা, জাহিদা হক চৈতী ও ফাহিমা আহমেদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।
প্রদর্শনীটি প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক