দিপু হত্যার ঘটনা তুলে ধরে প্রশাসন-পুলিশকে সতর্ক করলেন সিইসি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের ভালুকায় হিন্দু যুবক দিপু দাসকে হত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশকে সতর্ক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সারা দেশের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক বিশেষ সম্মেলনে সিইসি এই নির্দেশনা দেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একটা লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকায়। এই ধরনের ইনসাইটমেন্ট (উসকানি) অনেক হবে। তাই কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
সিইসি তার বক্তব্যে কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়ে বলেন, আমি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। কোনোভাবেই কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রত্যাশা করি না।
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা তার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন ও পূজার সময় সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই তাদের ভীতি দূর করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি আরও বলেন, মনোনয়নপত্র বাছাই থেকে শুরু করে নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত প্রিসাইডিং অফিসারদের যথাযথভাবে গাইড করতে হবে। কোনো প্রার্থী বা সাধারণ ভোটার যেন হয়রানির শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনি পরিবেশ স্বচ্ছ রাখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অফিসের সামনে যোগাযোগ নম্বর রাখার পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, বিধিভঙ্গ বা হয়রানির অভিযোগ যেন দ্রুত জানানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া বয়স্ক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ভোটকেন্দ্রে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার ওপরও তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, প্রশাসনের কোনো স্তরেই পক্ষপাতের সুযোগ নেই। যেকোনো ধরনের উসকানিমূলক পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ও প্রশাসনকে পেশাদারত্বের পরিচয় দিতে হবে।
উপস্থিত কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এখন খুব উৎসাহিত বোধ করছি। আপনাদের কথা শুনে বুকের জোর বহুগুণ বেড়ে গেছে। অবিলম্বে মাঠে গিয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কাজ শুরু করেন। পক্ষপাতমূলকভাবে কাজ করবেন না। আমাদের তো কোন ব্যক্তিগত অ্যাজেন্ডা নেই। আমার তো একমাত্র ইচ্ছা হলো দেশের জন্য কিছু করার তৃপ্তি নিয়ে মৃত্যুবরণ করা।
সিইসি আরও বলেন, দুজন ব্যক্তি আমাদের কাছে ভিভিআইপি। আইন থাকলে এখনি ঘোষণা করে দিতাম। একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আরেক জন প্রিজাইডিং অফিসার। যারা দায়িত্ব পেয়েছেন আপনারা নির্বাচন পরিচালনা বিধি পড়েন, নইলে প্রাথমিক দায়িত্ব পালনেই ব্যর্থ হবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক