প্রশাসনের লক্ষ্য মডেল নির্বাচন, দৃষ্টান্ত গড়ার অঙ্গীকার
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একটি ‘মডেল নির্বাচন’ উপহার দিয়ে ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য বলে তারা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচনকে ঘিরে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিরা।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ডিসি-এসপি, সকল রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তারা। একদিকে চিহ্নিত অপরাধীদের জামিন রোধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশে দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। দলমত নির্বিশেষে আমরা অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু করতে দিব না। বাংলাদেশে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন ইতিহাসে স্বাক্ষী হয়ে থাকবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, প্রেস মিডিয়ায় যা দেখছি তাতে মনে হয় সিরিয়া লিবিয়ায় বসবাস করছি। সাংবাদিকদের দেশের মানুষের কথা ভেবে রিপোর্ট করলে ভাল হয়। আমরা বর্তমানে কারো নিকট থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা যাদেরকে গ্রেপ্তার করি তাদেরকে ছাড়াতে দিনে বক্তব্য দেওয়া রাজনৈতিক নেতারা রাতে তদবির করেন। প্রিজাইডিং অফিসারদের হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বাসনা এই ২৬ সালের নির্বাচনকে ৩১ ও ৩৬ সালের মানুষ যেন মনে করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, আমাদের কাজ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা। বৈধ অস্ত্র জমা করা। নির্বাচনের বাজেটটা যেন সময়মতো পাই। নির্বাচনকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব গুজব ছড়ানো হয় এটা বন্ধ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ আমাদের খরচের মধ্যে মনোবল বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আশা করছি ২০২৬ সালে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা সকল স্টেক হোল্ডারদের সাথে সমন্বয় করছি। এআই জেনারেটেড যে কোন ছবি বা ভিডিও বন্ধ করার জন্য বিটিআরসিকে জানাচ্ছি। নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরে যদি সাজা দেওয়া হয় তাহলে এটা দেখে অন্য কেউ করার সাহস পাবে না। ২০২৬ সালের নির্বাচন ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কালু ও কাঁকন এই দুটি গ্রুপের সাথে কেউ পারছে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ড্রোন প্রয়োজন হতে পারে। উপজেলা-জেলা পর্যায়ে আমরা যদি যৌথভাবে মহড়া দেই তাহলে আশা করি কেউ অন্যায় কিছু করতে পারবে না।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সকল কাজ তাৎক্ষণিকভাবে করা হবে। অপরাধীদের ঢালাও জামিন বন্ধের বিষয়ে বিচার বিভাগের সাথে সমন্বয় করতে হবে।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বিজিবি ডেপ্লয়মেন্ট খুব জরুরি। বর্ডার দিয়ে অস্ত্র আসে, অপরাধী আসা-যাওয়া করে, তাই বর্ডার সংলগ্ন কেন্দ্রগুলোকে বিবেচনা করে কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন। ক্রিমিনালদের মুভমেন্ট ট্রাক করা প্রয়োজন। জেলখানার ভেতরে থেকে অনেকে ক্রাইম করে ফেলছে এটাকে দেখা উচিত। যারা চিহ্নিত অপরাধী তারা যেন কোনভাবেই জামিন না পায়। যারা ষড়যন্ত্রকারী তারা সবসময়ই একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। আমরা ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাই। ২০২৬ এর নির্বাচন ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক