খাবারে মানুষ ব্যয় করে বেশি
আয় করলে ব্যয় হবে—এটাই স্বাভাবিক। আর মানুষের মৌলিক যে চাহিদাগুলো রয়েছে, তাতে তুলনামূলক ব্যয় বেশিই থাকবে। এক্ষেত্রে আমাদের বেশি হয় খাবারে। মৌলিক চাহিদার মধ্যে খাবারের পরেই আছে বাড়ি বা ঘর ভাড়া বাবদ ব্যয়। যদিও বিবিধ বিষয়ে ব্যয় তার প্রায় তিন গুণ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২ বলছে এসব কথা।
বিবিএস তাদের ওয়েবসাইটে জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গত ১৪ ডিসেম্বর। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গড় আয়ের ৪৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ ব্যয় হয় খাবারে, পোশাকে ও জুতায় খরচ হয় আয়ের ছয় দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বাড়ি বা ঘর ভাড়া বাবদ খরচ ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুতে খরচ পাঁচ দশমিক ২৫ শতাংশ, গৃহস্থলির কাজে ব্যয় দুই দশমিক ১৯ শতাংশ, বিবিধ ব্যয় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।
দেশে শহরের একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ১০ হাজার ৯৫১ টাকা। আর গ্রামের মানুষের আয় অর্ধেকের কাছাকাছি, ছয় হাজার ৯১ টাকা। সে হিসাবে গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের গড় আয় অনেক বেশি। আর গ্রাম-শহর মিলিয়ে গত ১২ বছরের ব্যবধানে মানুষের গড় আয় বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। ২০১০ সালে মাথাপিছু মাসিক গড় ছিল দুই হাজার ৫৫৩ টাকা। আর ২০১৬ সালে মাথাপিছু মাসিক গড় আয় ছিল তিন হাজার ৯৪০ টাকা। এখন সেই আয় বেড়ে দাড়িঁয়েছে সাত হাজার ৬১৪ টাকায়।
একটি পরিবারের সবাই আয় করেন না, আবার অনেক পরিবার আছে যেখানে এক বা একাধিক উপার্জনকারী থাকতে পারেন। এসব উপার্জনকারীর গড় আয়ের হিসাবও জরিপে দেওয়া হয়েছে। উপার্জনকারীদের গড় আয় ২৫ হাজার ৭০৭ টাকা। ছয় বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৬৪৬ টাকা। এই হিসাব শুধুমাত্র উপার্জনকারীর আয়ের ভিত্তিতে করা।
একটি পরিবারের মাসিক আয় কত, ব্যয় কত, তা–ও খানা আয় ও ব্যয় জরিপে বলা হয়েছে। বিবিএস বলছে, বাংলাদেশে একটি খানা বা পরিবারের গড় সদস্যসংখ্যা চার দশমিক ২৬। ওই পরিবারের মাসিক আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। মাসে খরচ হয় গড়ে সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। খাবারের পেছনে প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার তিন টাকা খরচ করে একটি পরিবার।