পাবিপ্রবি ভিসির অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষোভ চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তাঁরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের বহিরাগত বলে সন্দেহ করছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আপন ভাইয়ের মেয়েসহ ১০২ জনকে বিতর্কিত নিয়োগ প্রদান করেছেন পাবিপ্রবির উপাচার্য। এ কারণে গতকাল বুধবার রাতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এর কিছুক্ষণ পরেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশ। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হাসিবুর রহমান শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা।
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনসহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থান নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ভিসি স্যার সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ। তাঁর মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিজের ভাতিজি কানিজ ফাতিমাকে অনিয়ম করে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া আরও ১০১ জনের গণনিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে নিয়মিত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. হাসিবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাতে কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। আমরা তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। তারা বহিরাগত হলে পাবিপ্রবি প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জুয়েল জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব সময়ই পুলিশ অবস্থান নিয়ে থাকে। ক্যাম্পাসে এ মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে কি না, তা আমাদের জানা নেই।’
এ বিষয়ে পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক এম রোস্তম আলীর মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টার পর সাংবাদিকদের পরিচয় পেয়ে তিনি কল কেটে দেন।
পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে নিজের ভাতিজিসহ শতাধিক বিতর্কিত নিয়োগসহ নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অস্বচ্ছতার অভিযোগে কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের সভাকে কেন্দ্র করে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দিনব্যাপী চরম উত্তেজনার পর রিজেন্ট বোর্ডের সভা স্থগিত করা হয়। পরে পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক টুকুর মধ্যস্ততায় পুলিশি পাহারায় ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
এ ছাড়া পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে শতাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্তের দাবিতে এককভাবে প্রতীকী অনশন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. এম আবদুল আলীম।