শাবিপ্রবির প্রক্টর আলমগীরকে অব্যাহতি, নতুন প্রক্টর ইশরাত
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রক্টর ড. আলমগীর কবিরকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নতুন প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইল।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অফিস আদেশে প্রক্টর বদলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীরকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে প্রক্টর পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে ১৪ দিন থেমে থাকলেও গতকাল বুধবার বিকেল থেকে আবারও শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তাঁরা।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির এক পর্যায়ে ১৯ জানুয়ারি থেকে এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী।
আজ বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার স্থানে নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে রক্তিম হস্তছাপ আঁকেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানান, শিক্ষার্থীদের লড়াইয়ের ইশতেহার হিসেবে এ হস্তছাপ আঁকা হলো।
গতকাল বুধবার বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের ছবি, ব্যঙ্গচিত্র সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলছে ও চলবে।’ এদিন তাঁরা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে উপাচার্যের পক্ষ নেওয়াদের হুঁশিয়ারি দেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ‘আমরা অধ্যাপক জাফর ইকবালের মাধ্যমে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। সে সময় আমাদের বিভিন্ন দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।’
শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা আমাদের কঠোর কর্মসূচিগুলো থেকে সরে আসার পরও ন্যূনতম দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। এ জন্য এত দিন পর আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায়ের জন্য কাল বৃহস্পতিবারও আমরা বিক্ষোভ মিছিল করব।’
গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ১৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পরদিন ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে আন্দোলনটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।