ঝিনাইদহের রুবাবা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয়
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের রুবাবা জামান বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স প্রথম বর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। তিনি উপজেলা শহরের বড় বাজার এলাকার মৃত মিরুজ্জামান ও জহুরা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন খানের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে রুবাবা বড়।
রুবাবা জানান, ২০১৪ সালে নলডাঙ্গা ভূষণ শিশু একাডেমি থেকে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। ২০১৭ সালে স্থানীয় সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। ২০২০ সালে একই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে যশোর বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ২০২২ সালে কালীগঞ্জ সরকারি মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচ এসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পান। তারই ধারাবাহিকতা এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা তিনজনের একজন হয়েছেন।
রুবাবা বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করা।’
এক প্রশ্নের জবাবে রুবাবা জানান, নিয়মিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পড়ালেখা করে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। গল্পের এবং বিজ্ঞানভিত্তিক বই পড়েন তিনি।
রুবাবা জামানের মা পারভীন খান জানান, এসএসসি পরীক্ষার তিন মাস আগে হঠাৎ তাঁর স্বামী (রুবাবা জামানের বাবা) মারা যান। বাবার মৃত্যুতে বড় মেয়ে রুবাবা ভেঙে পড়েন। স্বামীর শোক সামাল দেওয়ার সময়টা ছিল খুবই কঠিন। বাঁচতে হবে এবং বাঁচাতে হবে-সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করতে হবে। স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছে শক্তিকে প্রচণ্ড ভাবে কাজে লাগানোর জন্য স্কুলে চাকরির পাশাপাশি মেয়েকে সময় দিতে হয়েছে তাঁর। ভর্তি যুদ্ধে নাকাল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রুবাবার সাফল্য সুন্দর জীবনের সূচনা করেছে। মেয়ের বাবা বেঁচে থাকলে বেশি খুশি হতেন।
রুবাবার ছোট ভাই আবরার আবিদ স্থানীয় নলডাঙ্গা ভুষণ শিশু একাডেমিতে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। ক্লাসে তার রোল নম্বর এক।