অবরুদ্ধ কুয়েট উপাচার্য, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত একাডেমিক কার্যক্রম

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে আগের মতো রাজনীতি নিষিদ্ধ বহালসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুয়েট উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
সিন্ডিকেট সভায় গতকাল মঙ্গলবারের হামলায় জড়িতদের বহিষ্কার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসা খরচসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
অপরদিকে ছাত্রদল সংবাদ সম্মেলন করে কুয়েটের ঘটনায় তাদেরকে জড়িয়ে অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় ছাত্রদলের পক্ষে ক্যাম্পাসে ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের সামনে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে গতকাল বিকেল হতে রাত পর্যন্ত দুই দল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এই সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বহিরাগতরা যোগ দিলে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এই সংঘর্ষে উপাচার্যসহ ২০ জন আহত হন। পরে বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রাতেই শিক্ষার্থীরা কুয়েট মেডিকেল অবরুদ্ধ করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদকসহ তিনজনের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আজ দুপুর পর্যন্ত সময় বেধে দেন। দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা দাবি না মানায় প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। অপরদিকে দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি আবু আফসান মো. ইব্রাহিম সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা জানান।
দুপুর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. ফারুক হোসেন ছাত্রদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সকাল থেকেই অনেক শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করতে শুরু করেছে। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে যারা ভাড়া রয়েছেন তাদের ভিতর ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা রয়েছেন উদ্বিগ্ন।
বিশেষ জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং সকল রাজনৈতিক কার্যকম নিষিদ্ধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ, বহিরাগতসহ রাজনীতির সাথে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষ বহিষ্কার, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা কুয়েট বহন করবে এবং এই ঘটনা তদন্তের জন্য চার সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সকাল থেকেই কুয়েটের পরিবেশ কিছুটা থমথমে। তবে কুয়েটের বাইরের দোকানপাট খুলেছে। প্রধান ফটকের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সেনাবাহিনীকে টহল দিতে দেখা গেছে।